Sunday, August 21, 2022

সত্যই ধর্মের মূল

  সত্যই ধর্মের মূল


ধর্মমূলনমিদং রাম বিঘ্নিতঞ্চ সতামপি।
তৎসত্যং ন ত্যজে দ্রজা কুপিতস্ত্বৎকৃতে যথা।

অনুবাদঃ রাম! সত্যই ধর্মের মূল কারন ইহা সাধুমাত্রেই জানেন; এজন্য তোমাকে বলিতেছি তুমি এরুপ করো, যাহাতে রাজা দশোরথ তোমার নিমিত্ত আমার উপর রাগ করিয়া সেই সত্য পরিত্যাগ না করেন।
......... ২৪ অষ্টাদশ স্বর্গ অযোধ্যা কান্ড, বাল্মীকি রামায়ন।


ইতিহাস পঞ্চম বেদ। তার মানে মহাভারত অার রামায়ন পঞ্চম বেদ। স্মৃতি ও শ্রুতির বিরোধে শ্রুতির নির্দেশ মান্য।
"বেদ অাখিল ধর্ম মূলম্" স্মৃতির বাক্য। যদিও সেখানে কর্মকান্ড-জ্ঞানকান্ড সম্পর্কেও আলাদা করে কিছু বলা নাই।

ছায়া রাধা:

 ছায়া রাধা:


কৃষ্ণেন সহ রাধায়াঃ পুণ্যে বৃন্দাবনে বনে।
বিবাহং কারয়ামাস বিধিনা জগতং বিধিঃ । ৪৩।
স্বপ্নে রাধাপদাম্ভোজং ন হি পশ্যন্তি বল্লবাঃ ।
স্বয়ং রাধা হরেঃ ক্রোড়ে চ্ছায়া রায়াণ মন্দিরে। ৪৪।
[ শ্রীব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ, প্রকৃতিখন্ড, অধ্যায় ৪৯, শ্লোক- ৪৩,৪৪ ]
বঙ্গানুবাদঃ
ব্রহ্মা পবিত্র বৃন্দাবন বনমধ্যে শ্রীকৃষ্ণের সহিত রাধিকার বিবাহ বিধি সম্পাদন করিয়াছিলেন। রায়ানাদি গোপগণ স্বপ্নেও শ্রীমতীর চরণকমল দর্শন করিতে সমর্থ হয় নাই, কারণ রাধিকা স্বয়ং কৃষ্ণক্রোড়ে বিরাজমানা, কেবল তার ছায়া রায়াণ মন্দিরে বাস করেছিলো।।
অনুভাষ্যঃ
৪৪ শ্লোকে শ্লোকে 'বল্লব' শব্দের অর্থ হলো গোপ। এখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, কোন গোপেরই সে সামর্থ নেই যে তারা শ্রীমতি রাধিকাকে দেখা দূরে থাক, শ্রীমতি রাধিকার চরণও দর্শন করতে পারে না। তাহলে রায়ান গোপের ঘরে যে রাধাকে দেখা যেতো সে কে? এ শঙ্কা নিবারণের জন্য পরবর্তী শ্লোকে এও পরিষ্কার করা হয়েছে যে, রায়ান গোপের ঘরে যে রাধাকে দেখা যায় তিনি হলেন স্বয়ং শ্রীমতি রাধিকা নন, তিনি হলেন শ্রীমতি রাধিকার ছায়া। রাবণ যেমন মূল সীতাকে হরণ করতে পারে নি, কেবল ছায়া সীতাকে হরণ করেছিলো, ঠিক সেভাবে রায়ানও মূল রাধিকাকে বিবাহ করতে পারে নি, শ্রীমতি রাধিকার ছায়াকেই বিবাহ করেছিলো। স্বয়ং শ্রীমতি রাধিকা কৃষ্ণের সাথেই নিত্য বাস করেন, তিনি অন্য কারো সাথে বাস করেন না। যেহেতু সম্পর্কে রায়ান কৃষ্ণের মামা হয়, তাই অনেকে ভুল করে শ্রীমতি রাধিকাকে কৃষ্ণের মামী ভাবেন, কিন্তু সে ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। এ ভ্রান্ত ধারণা যাতে মা হয় সেজন্য আগের অধ্যায়ে বলা হয়েছে, শ্রীমতি রাধিকা রায়ানের পত্নী নন, তিনি কেবল ও কেবল শ্রীকৃষ্ণের নিত্যপত্নী।



স্বয়ং রাধা কৃষ্ণপত্নী কৃষ্ণবক্ষঃস্থলস্থিতা ।
প্রাণাধিষ্ঠাতৃদেবী চ তস্যৈব পরমাত্মনঃ। ৪৭।।
[ শ্রীব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ, প্রকৃতিখন্ড, অধ্যায় ৪৮, শ্লোক ৪৭ ]
বঙ্গানুবাদঃ
শ্রীমতী রাধিকা স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের পত্নীরূপে অবস্থিতা। নিরন্তর তিনি পরমব্রহ্ম কৃষ্ণের বক্ষঃস্থলে স্থিতি করেন, ফলতঃ সেই রাধা পরাৎপর কৃষ্ণের প্রাণাধিষ্ঠাত্রী দেবীরূপে নির্দিষ্টা আছেন ॥
শ্রীমতি রাধিকাও শ্রীমতি যশোদাকে একই কথা বলেছিলেন-
অহমেন স্বয়ং রাধা ছায়ারায়াণকামিনী।
রায়াণঃ শ্রীহরেরংশঃ পার্ষদপ্রবরোমহান্ ॥
[ শ্রীব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ, কৃষ্ণজন্মখন্ড, অধ্যায় ১১১, শ্লোক ৬৮, রাধা উক্তি ]
বঙ্গানুবাদঃ
আমিই স্বয়ং রাধা। রায়ান এর যে পত্নী সে আমার ছায়ামাত্র। রায়াণ শ্রীহরির একজন প্রধান পার্ষদ, তিনি শ্রীহরির অংশ।