Sunday, April 4, 2021

মূর্তি পূজা:

মূর্তি পূজা: 


     


দেহধারী মানুষের পক্ষে সাকার ঈশ্বরের তুলনায় নিরাকার ঈশ্বরে মনঃসংযোগ করা অধিক কষ্টকর। ভক্তিবাদী সম্প্রদায়গুলিতে মূর্তিপূজা ঈশ্বরোপাসনার একটি বিশেষ অঙ্গ। ভক্তিবাদীরা মূর্তিপূজা বা মূর্তিসেবার মাধ্যমে ঈশ্বরের সঙ্গে মানুষের মধুর সম্পর্ককে সুদৃঢ় রাখার কথা বলেন। কেউ টেলিফোনের সঙ্গে কথা বলে না; বরং টেলিফোনের মাধ্যমে একজনের সঙ্গে আর এক জনের যোগাযোগ স্থাপিত হয়। টেলিফোন ছাড়া দূরে থাকা লোকটির সঙ্গে কথা বলা অসম্ভব।

হিন্দুধর্মে শিবলিঙ্গ  শালগ্রাম শিলা মতো নিরাকার প্রতীকেও দেবতার পূজা প্রচলিত রয়েছে।

সনাতন ধর্মে আট (৮ )প্রকারের মূর্তি পূজা আছে ..

আমার পূজা অষ্টমূর্তির মধ্যে যে কোনো বিগ্রহে বিধেয় ! যেমন ১- প্রস্তর ২- দারু ৩- ধাতু .৪ বালুকা ৫- মৃত্তিকা ও চন্দনাদি ৬- পট চিত্র ৭ মনোময় ৮- মনিময় !!!

........... ভগবত ১১/২৭/১২


আগম শাস্ত্র মতে, "স্থূলমূর্তি" বা "বিম্বমূর্তি" (মূর্তির শরীর) ও "মন্ত্রমূর্তি" (মূর্তির শক্তি) এক নয়। মন্ত্রমূর্তিই কেবল প্রাচীন মন্দিরগুলিতে পূজিত হয়ে আসছে। বিম্বমূর্তিতে স্থিত মন্ত্রমূর্তিটিকে যথাযথ অনুষ্ঠান, মুদ্রাপ্রদর্শন, স্তোস্ত্রপাঠ ও বলিদানের মাধ্যমেই পূজা করা সম্ভব।


দক্ষিণ ভারতে কালো গ্র্যানাইট পাথরের মূর্তি নির্মিত হয়। উত্তর ভারতে শ্বেতপাথরের মূর্তি নির্মিত হয়ে থাকে। বঙ্গদেশে মাটি, ধাতু, কাঠ ও পাথর দিয়ে মূর্তি নির্মাণের প্রথা রয়েছে।


ভগবৎ-গুনের (মানে ভগবানের) প্রকাশক ও গুণারোপিত ভগবৎ সত্তার পরিচায়ক দেবগণের প্রীত্যর্থে সঠিক সেবা, গুণকীর্তন, প্রর্থনা, প্রনাম তথা শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতাকে পূজা বলা হয়। এক কথায় বলা যায় সেবক ও ইশ্বরের ঐক্য সম্পর্কই পূজা।
যোগো জীবাত্না নোরৈক্যং পূজনং সেবকেশয়ো। পূজা প্রধানত দুই প্রকার। কাম্য-কর্মাত্নক পূজা ও নিষ্কাম পূজা। কাম্যকর্মাত্নক পূজা: স্বীয় উদ্দেশ্য মানে নিজের উদ্দেশ্য সিদ্ধির লক্ষ্যে ধন, জন, বিদ্যা, বুদ্ধি, রোগমুক্তি ইত্যাদি ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য যে পূজা তা কাম্য-কর্মাত্নক(ক্ষুদ্র কামনা যুক্ত) পূজা। নিস্কাম পূজা : বহুর কল্যানে, বহুর উন্নয়নে এবং বৃহৎ সমৃদ্ধির লক্ষ্যে মহৎ কামনাযুক্ত যে পূজা যজ্ঞ, সামাজিক ও মানবিক সেবামূলক কর্মাদির মাধ্যমে নিষ্পন্ন হয় তা নিষ্কাম পূজা নামে অভিহিত। এ দুয়ের মধ্যে নিষ্কাম পূজাই শ্রেষ্ঠ পূজা।

No comments:

Post a Comment