Friday, April 2, 2021

সুদর্শন চক্র নিয়ে অজ্ঞাণতা পরিস্কার:

 সুদর্শন চক্র নিয়ে অজ্ঞাণতা পরিস্কার:





গীতা কি বলে দেখি:
ন মে পার্থাস্তি কর্তব্যং ত্রিষু লোকেষু কিঞ্চন ।
নানবাপ্তমবাপ্তব্যং বর্ত এব চ কর্মণি ।। ২২।।
অনুবাদ: হে পার্থ! ত্রিলোকে আমার কিছু করণীয় নাই । ত্রিভুবনে আমার কিছু পাওয়ার বা না পাওয়ার কিছু নাই, তবুও আমি কর্ম করিয়া যাইতেছি।
……………… গীতা ৩/২২



যদি হ্যহং ন বর্তেয়ং জাতু কর্মণ্যতন্দ্রিত: ।
মম বর্ত্মানুবর্তন্তে মনুষ্যা: পার্থ সর্বশ: ।। ২৩।।
অনুবাদ: হে অর্জুন! আমি অনলস হইয়া কর্ম করিতেছি। যদি তাহা আমি না করিতাম তবে নিশ্চিয়ই মানবগণ আমারই পথ অনুসরন করিত।। ২৩।।
……………… গীতা ৩/২৩


এটা থেকে প্রমাণিত যে লোকশিক্ষার জন্য কৃষ্ণ নিজে অনেক কর্ম করিয়াছেন।


মহাভারত কি বলে দেখি:
অহমাত্মা হি লোকানাং বিশ্বেষ্যাং পান্ডুনন্দন! ।
তস্মাদাত্মানমেবাগ্রে রুদ্রং সংপুজয়াম্যহম্ ।। ২২।।
অনুবাদ: পান্ডুনন্দন! আমিই সমস্ত লোকের জীবাত্মা। অতএব আমি প্রথমে আমার আত্মসরুপ রুদ্রের পূজা করিয়া থাকি।।
………………… ৩২৭ অধ্যায়, শান্তি পর্ব, মহাভারত।



যদ্যহং নার্চ্চয়েয়ং বৈ ঈশানং বরদং শিবম্ ।
আত্মানং নার্চ্চয়েৎ কশ্চিদিতি মে ভাবিতাত্মন: ।।২৩।।
অনুবাদ: আমি যদি বরদাতা ও শিবের পূজা না করি, তাহা হইলে কেহই আমারই আত্মস্বরুপ শিবের পূজা করিবে না, ইহাই আমার ধারণা।।
………………… ৩২৭অধ্যায়, শান্তি পর্ব, মহাভারত


এটা থেকে প্রমানিত যে কৃষ্ণ তারই আত্মস্বরুপ বিনা কারো পূঁজা করেন না। আর লোক মধ্যে শিব পূঁজার ব্যাপ্তি ঘটানোর জন্যই শিবের পূঁজা করেছিলেন।



এখন দেখি সুদর্শন চক্রের প্রকৃত ইতিহাস:
কৃষ্ণ উপমন্যুর নিকট থাকাকালীন কথোপকথন------

উপমন্যু উবাচ:
তস্যৈব পুত্রববো মন্তাবো নাম বিশ্রুত: ।
মহাদেবরাচ্ছক্রং বর্ষার্বুদমযোধযৎ ।। ৭৩।।
অনুবাদ: মন্দাব নামে বিখ্যাত সেই হিরন্যকশিপুরই প্রধানপুত্র মহাদেবের বরে দশকোটি বৎসর পর্যন্ত ইন্ত্রের সহিত যুদ্ধ করিয়াছিলো ।।
……………… মহাভারত অনুশাসন পর্ব অধ্যায় ১৩, শ্লোক নং ৭৩



বিষ্ণোশ্চক্রঞ্চ তদ্ঘোরং বজ্রমাখন্ডলস্য চ ।
শীর্ণং পুরাভবত্তাত! প্রহস্যাঙ্গেষু কেশব ! ।৭৪।।
অনুবাদ: বৎস কৃষ্ন ! বিষ্ণুর সেই ভয়ঙ্কর চক্র এবং ইন্দ্রের বজ্র পুর্ব্বাকালে সেই মন্দাবেব অঙ্গে পতিত হইয়া বিশীর্ণ হইয়া গিয়াছিলো। ৭৪।।
……………… মহাভারত অনুশাসন পর্ব অধ্যায় ১৩, শ্লোক নং৭৪



যত্তদ্ভগবতা পূর্ব্বং দত্তং চক্রং তবানঘ ।
জলান্তরচরং হত্বা দৈত্যঞ্চ বলগর্ব্বিতম্ ।। ৭৫।।
উৎপাদিতং বৃষাম্কেন দীপ্তজ্বলনসন্নিভবম্ ।
দত্ত্বং ভগবতা তুভ্যং দুর্দ্ধর্ষং তেজসাদ্ভুতম্ ।। ৭৬।।
অনুবাদ: নিশ্পাপ কেশব ! ভগবান মহাদেব সেই যে চক্র আপনাকে দিয়াছিলেন তিনি বলগর্ব্বিত জলাভ্যন্তবস্থিত অন্ধকাসুরকে বধ করিয়া সেই চক্র উৎপাদন করেন, পরে আবার তিনি তেজে অদ্ভুত ও প্রজ্জ্বলিত অগ্নির তুল্য সেই দুর্দ্ধর্ষ চক্র আপনাকে দান করিয়াছিলেন।
........................মহাভারত অনুশাসন পর্ব, অধ্যায় ১৩, শ্লোক নং ৭৫-৭৬



ন শক্যং দ্রষ্টুমন্যেন বর্জ্জযিত্বা পিনাকিনম্ ।
সুদর্শনং ভবত্যেবং ভবোনোক্তং তদাতু তৎ।। ৭৭।।
অনুবাদ: মহাদেব ব্যতীত অন্য কেহই সেই চক্র দেখিতে পারিত না। তখন মহাদেব বলিয়াছিলেন এই চক্রের নাম সুদর্শন হইবে।
……………… মহাভারত অনুশাসন পর্ব অধ্যায় ১৩, শ্লোক নং৭৭



এখান থেকে বোঝা গেলো যে বিষ্ণুর চক্রই পুনরায় বিষ্ণুর(কৃষ্ণের) নিকট ফেরত আসলো মহাদেবের মাধ্যমে। চক্র মহাদেবের ছিলোনা। মহাদেবের সকল অস্ত্রই তো বিষ্ণুর দান।
লিংকগুলিতে গেলে অপপ্রচার গুলি থেকে সত্যে ফিরে আসবেন। বইয়ের সহিত মিলিয়ে দেখুন প্রয়োজনে।

No comments:

Post a Comment