Monday, June 21, 2021

হংস রুপী পরমাত্মা

 হংস রুপী পরমাত্মা:




আসুন আমরা দেখে নেই ঈশ্বর কখন হংস রুপ কখন ধরেছিলেন?


ছবিটি ভাগবত পুরান ১০/১৩/১৯




আসুন দেখি মহাভারত হংসরুপী পরমাত্মা সম্পর্কে কি বলেন,


ছবিটি কালি প্রসন্ন সিংহের মহাভারত থেকে নেওয়া


ছবিটি গীতা প্রেসের মহাভারত থেকে নেওয়া




পঞ্চমতের চতুর্বৈঞ্চবের নিম্বার্ক সম্প্রদায়ের পরম্পরায় প্রথমেই হংস ভগবান:



আসুন এখন আমরা দেখি বেদের কোথায় হংস রুপী পরমেশ্বরকে পাওয়া যায়?


বীভৎসূনাং সযূজং হংসমাহুরপাং দিব্যানাং সখ্যে চরন্তম্।
অনুষ্টুভমনু চর্চূর্যমাণমিন্দ্রং নি চিক্যুঃ কবয়ো মনীষা।। ৯।।

অনুবাদঃ সে সকল ভীত দিব্যজলের সঙ্গী হয়ে যিনি তাদের বন্ধুত্ব অাচরণ করেন, তাঁকে হংস বা সূর্য্য বলে। তিনি স্তবের যোগ্য, তিনি জলের পশ্চাৎ পশ্চাৎ ভ্রমণ করেন। বিদ্বানগণ বুদ্ধিবলে তাকে ইন্দ্র বলে স্থির করেছেন।।

.......................১০/১২৪/৯।। ঋগ্বেদ।।



সহস্রহ্ ন্যমিতি চাত্র মন্ত্র এষ প্রদর্শিতঃ।
এবনং সমারুঢ়ো হংসযোগবিচক্ষণঃ।।
ন বধ্যতে কর্মচারী পাপকোটিশতৈরপি।।৫।।

অনুবাদঃ (এখানে হংসরুপে ওঁম্কারকে উপাসনার ফল কথিত হচ্ছে।---) সহস্রহ্ ন্যম -- এই মন্ত্র এখানে প্রদর্শিত হয়েছে। এইভাবে যোগবিচক্ষন ব্যাক্তি সেই হংসে সমারুঢ় হন; (তখন) তাঁকে (কোনো) কর্ম বাধা দেয়না, শত পাপও তাকে অাবদ্ধ করতে সক্ষম হয় না।


ভূলোকঃ পাদযোন্তস্য ভুবলোকস্ত্ত জানুনোঃ।
স্বর্লোকঃ কটিদেশে তু নাভিদেশে মহর্জগৎ।।৩।।
জনলোকস্ত্ত ঋদয়ে কন্ঠদেশে তপস্ততঃ।
ধ্রুবোর্ললাটমধ্যে তু সত্যলোক ব্যবস্থিত।।৪।।

অনুবাদঃ (হংসের শরীরে সপ্তলোকের অবস্থান প্রদর্শন হচ্ছে) (হংসের) পায়ে ভূর্লোক, জানুতে ভুবর্লোক, কটি দেশে স্ব্রলোক, নাভিদেশে মহর্লোক অবস্থিত; (তার) ঋদয়ে জ্ঞানলোক, কন্ঠদেশে তপঃলোক, ললাট ও ভ্রুর মধ্যস্তলে সত্যলোক অবস্থান করে।

............... নাদবিন্দূপনিষৎ




প্রাণিনাং দেহমধ্যে তু স্থিতো হংসঃ সদাচ্যুতঃ।
হংস এব পরং সত্যং হংস এব তু শক্তিকম্।। ৬০।।

অনুবাদঃ অচ্যুতরুপে প্রাণিগনের দেহের মধ্যে সর্বদা হংস থাকেন। হংসই পরম সত্য, হংসই শক্তি।


হংস এব পরং বাক্যং হংস এব তু বৈদিকম্।
হংস এব পরো রুদ্রো হংস এব পরাৎপরম্।।৬১।।

অনুবাদঃ হংসই পরম বাক্য, বেদের বিষয় হংসই। হংসই শ্রেষ্ঠ রুদ্র, হংসই পরমের পরম।


সর্বদেবস্য মধ্যস্থো হংস এব মহেশ্বরঃ।
পৃথিব্যাদিশিবান্তং তু অকারাদ্যশ্চ বর্ণকাঃ।। ৬২।।
কূটান্তা হংস এব স্যান্মাতৃকেতি ব্যবস্থিতাঃ।
মাতৃকারহিতং মন্ত্রমাদিশন্তে ন কুত্রচিৎ।।৬৩।।

অনুবাদঃ সকল দেবের মধ্যে স্থিত হংসই মহেশ্বর। পৃথিবী প্রভৃতি থেকে শিব পর্যন্ত, অকারাদি বর্ণসমূহ এবং সর্ব্বোচ্চ মাতৃকা(অনুস্বার) হংসরুপে ব্যবস্থিত রয়েছে। মাতৃকাবিহীন মন্ত্র কোথাও আদিষ্ট হয়না।

............. ব্রহ্মবিদ্যোপনিষৎ



হংসঃ শুচিষদ্বসুরন্তরিক্ষসদ্ধোতা বেদিষদতিথির্দুরোণসৎ।
নৃষদ্বরসদৃতসদ্ বোমসদব্জা গোজা ঋতজা অদ্রিজা ঋতং বূহৎ।।


ছবিটি তথাকথিত আর্য্য সমাজী তুলশীরামের। এখানে হংস বলতে মহান অাত্মা বলছে যে শত্রুকে ধ্বংস করেন। ভাষ্যের পুরোটা জুড়ে ইশ্বরীয় জয়গান।


ছবিটি পন্ডিত লেখরাম বেদিক মিশনের দেবি চণ্ডী জী এর। এখানে সরাসরি পাপ নাশকের ইশ্বর বলা হচ্ছে হংস শব্দে। তার অর্থ দ্বাড়ায় হংস ইশ্বর।



ছবিটিও পণ্ডিত লেখরাম বেদিক মিশনের হরিস্বরন সিদ্ধান্ত লঙ্কার এর। এখানে হংস বলতে পাপনাশক প্রভু মানে ইশ্বর বোঝাচ্ছে।


আর্যসমাজী দয়ানন্দের ভাষ্য যিনি হংস অর্থে দুষ্টকর্মহন্তা বুঝিয়েছেন।


......... শুক্ল যজুর্বেদ ১২/১৪ অথবা কঠ উপনিষৎ ২/২/২ বা ৮৮।


এই মন্ত্রটিতে তথাকথিত চারজন আর্য্য সমাজি নামধারী চার রকম ভাষ্য প্রদান করেছেন। তাদের ভাষ্য যদি সঠিকই হবে তবে এতো ভাষ্যের প্রয়োজন কি? তারা নিজেরাই নিজেদের ভাষ্য মানেন না বলে নতুন ভাষ্য প্রদান করেছেন ।



নবদ্বারে পুরে দেহী হংসো লেলায়তে বহি:।
বশী সর্বস্য লোকস্য স্থাবরস্য চরস্য চ।।

অনুবাদ: স্থাবর ও জঙ্গমাদি সমস্ত লোকের নিয়ন্তা সেই পরমাত্মা নবদ্বার বিশিষ্ট দেহপুরে দেহীরূপে অবস্থিত থাকিয়া বহির্জগতের বিষয় গ্রহন করেন।
................ শ্বেতাশ্বতর উপনিষধ ৩/১৮।



একো হংসো ভুবনস্যাস্য মধ্যে স এবাগ্নি: সলিলে সন্নিবিষ্ট:।

তমেব বিদিত্বাহতিমৃত্যুমেতি নান্য: পন্থা বিদ্যতেহয়নায়।।


অনুবাদ: এই ভুবনের মধ্যে একমাত্র হংস(পরমেশ্বর) বিদ্যমান আছেন। তিনিই জল পরিণাম এই দেহে অবিদ্যাদির দাহক অগ্নিরুপে অবস্থিত। তাহাঁকে জানিয়াই সাধক মৃত্যুকে অতিক্রম করেন, এই পরমপদ প্রাপ্তির আর কেনোও পথ নাই।

............... শ্বেতাশ্বতর উপনিষধ ৬/১৫



আমরা জানি পরম বলিতে বিষ্ণুর পরম পদই বোঝায়। এখানে হংস রুপী বিষ্ণু কিংবা বিষ্ণু রুপী হংসের কথায় বোঝাচ্ছে।


এছাড়াও মুক্তিকা উপনিষধের তালিকায় হংসো উপনিষৎ ও পরমহংসোপনিষৎ বিদ্যমান যেখানে অযস্র হংস রুপী পরমাত্মার জয়গান করা হয়েছে।

No comments:

Post a Comment