নামসংকীর্তনে বৈদিক মুক্তির পন্থা:
আসুন দেখি অস্টাদশ পুরানের স্কন্দপুরানে কি বলছে দেখে নেই:
.................... ১০৯নং শ্লোক, ১০ম অধ্যায়, বিষ্ণু খন্ড, স্কন্দ পুরান।
স্কন্দ পুরানের এই ছবিটি থেকে আমরা জানতে পারলাম যে বৈষ্ণবরা উচ্চৈ:স্বরে নামকীর্তন করেন।
আসুন দেখে নেই বেদে কি বলে?
ওঁ তৎ সৎ। ওঁ "পদং দেবস্য নমসা ব্যন্তঃ শ্রবস্যবঃ শ্রব আপন্নমৃক্তম্।
নামানি চিদ্ দধিরে যজ্ঞিয়ানি ভদ্রায়াং তে রণয়ন্তঃ সংদৃষ্টৌ।।
হে পরমপূজ্য! আপনার পদারবিন্দে আমি বারংবার প্রণাম করি কারণ, ঐ শ্রীচরণমাহাত্ম্য শ্রবণ করিলে ভক্তগণ যশ ও মোক্ষের অধিকারী হইতে পারে; অন্য কথা কি, যাঁহারা ঐ শ্রীপাদপদ্ম নির্বাচনের জন্য বাদবিসংবাদ প্রবৃত্ত হন এবং পরস্পর কীর্তন উহার অবধারণ করেণ, তাঁহাদের অন্তরে আসক্তির বিকাশ ঘটিলে, তাঁহার সাক্ষাৎকারের জন্য চৈতন্যস্বরুপ আপনার নাম আশ্রয় করিয়া থাকে।
...................... ঋগ্বেদ ৬/১/৪
ওঁ আহস্য জানন্তো নাম চিদবিবক্তন্ মহস্তে বিষ্ণো সুমতিং ভজামহে।। ওঁ তৎ সদিত্যাদি।
হে বিষ্ণে! তে(তব) নাম চিৎ (চিৎস্বরুপম্) অতএব মহঃ(স্বপ্রকাশরুপম্) তস্মাৎ অস্য(নাম্ন) আ(ঈশোদপি) জানন্তঃ (ন তু সম্যক্ উচ্চারণ মাহাত্ম্যাদিপুরস্কারেন, তথাপি) বিভক্তণ( ব্রুবাণা; কেবলং তদক্ষরাভ্যাসমাত্রং কূর্ব্বানাঃ) সুমতিং (তদ্বিষয়ং বিদ্যাম্) ভজামহে (প্রাপ্নুমঃ) যত ওঁ তৎ (প্রণববঞ্জিত বস্তু) সৎ (স্বতসিদ্ধম্ ইতি)।
...... জীব গোষ্মামী।
তাৎপর্যঃ হে বিষ্ণো, তোমার নাম চিৎস্বরুপ অতএব স্বপ্রকাশ। সুতরাং এই নামের উচ্চারণ মাহাত্ম্যদি সম্মকরুপে না জানিয়াও, যদি সামান্য কিছুমাত্র জানিয়াও আমরা কেবল কিছুমাত্র সেই অক্ষর নাম উচ্চারণ করিয়াই যাই, তার ফলে আমরা তোমাবিষয়িনী বিদ্যা লাভ করিতে পারিব। যেহেতু ইহা প্রণবব্যঞ্জিত বস্তু সেহেতু স্বতঃসিদ্ধ।
রাম গোবিন্দ ত্রিবেদীর ঋগবেদ ভাষ্য থেকে দিলামঃ
বিষ্ণু কা নাম জানকর কীর্তন করো। বিষ্ণু, তুম মহানুভাব হো তুম্হারী বুদ্ধি কি উপাসনা করনে হু।
.................... ঋগ্বেদ ১/১৫৬/৩
সততং কীর্ত্তয়ন্তো মাং যতন্তশ্চ দৃঢ়ব্রতাঃ।
নমস্যন্তশ্চ মাং ভক্ত্যা নিত্যযুক্তা উপাসতে।।
অনুবাদ: তাঁহারা যত্নশীল ও দৃঢ়ব্রত হইয়া ভক্তিপূর্ব্বক সর্ব্বদা আমার কীর্ত্তন এবং বন্দনা করিয়া নিত্য সমাহিত চিত্তে আমার উপাসনা করেন।
............... গীতা ৯ম অধ্যায় ১৪নং শ্লোক।
স এষ যে চৈতস্মাদর্বাঞ্চো লোকাস্তেষাং চেষ্টে মনুষ্যকামানাং চেতি তদ্ য ইমে বীণায়াংগায়স্ত্যেং তে গায়ন্তি তস্মাত্তে ধনসনয়ঃ।।
অনুবাদঃ আধ্যাত্মিক আত্মা হইতে অধস্তন যে সকল লোক আছে, চাক্ষুষ পুরুষ সেই সমুদয় লোকের ঈশ্বর এবং মনুষ্যদিগের কামনারও ঈশ্বর। বীণা-সংযোগে গান করে, তাহারা ইহারই গান করে এজন্য তাহারা ধনবান হইয়া থাকে।
........ ১/৭/৬ ছান্দোগ্য উপনিষদ।
নামসংকীর্তন যে বৈদিক পন্থা তা প্রমাণিত। এজন্যই বৈষ্ণবরা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে নামকীর্তন করেন।
কৃষ্ণের যত নাম রয়েছে তার মধ্যে কৃষ্ণ নামই শ্রেষ্ঠ।
নাম্নাং মুখ্যতরং নাম কৃষ্ণাখ্য মে পরন্তপ।
প্রায়শ্চিত্তমশেষানাং পাপানাং মোচকং পরম্।।
অনুবাদঃ হে পরন্তপ! আমার নাম সমুহের মধ্যে কৃষ্ণ নামই শ্রেষ্ঠতর, ইহা অশেষ পাপের প্রাশ্চিত্তস্বরুপ এবং পরম মুক্তিকর।
....................... ১১/২৬৪ হরি ভক্তি বিলাস।
No comments:
Post a Comment