Monday, September 12, 2022

রাধের শ্যাম:

রাধের শ্যামঃ




শ্যামং হিরণ্যপরিধিং বনমাল্যবর্হ-

ধাতুপ্রবালটবেষমনুব্রতাংসে

বিন্যস্তহস্তমিতরেণ ধুনানমব্জং

কর্ণোৎপলালককপোলমুখাব্জহাসম্।।২২



অনুবাদ: তার শ্যামল অঙ্গে পরিধানের পীত বসন যেন সোনার দীপ্তি বিচ্ছুরন করছে, গলায় বনফুলের মালা, মাথায় ময়ূরপুচ্ছের চূড়া, শরীরে বিচিত্র বর্ণের ধাতুমৃত্তিকার অঙ্গরাগ আর নবকিশলয়ের অলংকার- অভিনব সুন্দর নটবর-বেশধারী একটি হাত রেখেছেন এক সহচরের কাঁধে, আরেক হাতে ধৃত লীলাকমলটি সঞ্চালিত করছেন নিজেই

........ ২২নং শ্লোক, ২৩অধ্যায়, ১০ম স্কন্ধ, ভাগবত।



উতঙ্ক ঋষি কৃষ্ণকে বললেনঃ

হিরণ্যগর্ভরুপায় সংসারোত্তারণায়

পুরুষায় পুরাণায় শান্তশ্যামায় তে নম:

অনুবাদ: ভগবান! আপনি ব্রহ্মস্বরুপ, সংসার হইতে উ্ধারকারী, পুরাণপুরুষ, শান্ত-মুর্ত্তি শ্যামবর্ণ- আপনাকে নমস্কার

………… শ্লোক নং ০৮, অধ্যায় নং ৭০, অশ্বমেদিকা পর্ব, মহাভারত।



শ্যামাচ্ছবলং প্রপদ্যে শবলাচ্ছ্যামং প্রপদ্যে

অনুবাদ: আমি শ্যামবর্ণ(ঋদয়স্থিত ভেদরহিত  ব্রহ্ম) থেকে বিচিত্রবর্ণে(বিচিত্রাপূর্ণ  ব্রহ্মে) যাই আবার বিচিত্র বর্ণ হইতে শ্যামবর্ণে যাই

............... ছান্দোগ্য উপনিষদ /১৩/

Saturday, September 3, 2022

আদি বিরাট পুরুষ নারায়ন

 আদি বিরাট পুরুষ নারায়ন




আদি বিরাট পুরুষ নারায়ন
মনুসংহিতা: প্রথম অধ্যায়

আপো নারা ইতি প্রোক্তা আপো বৈ নরসূনব: ।
তা যদস্যাযনং পূর্ব্ব তেন নারায়ণ: স্মৃত: ।। ১০।।

নর নামক পরমেশ্বররের দেহ হইতে জলের সৃষ্টি হইয়াছে বলিয়া উহাকে নার বলা যায়, যেহেতু ঐ জলসকল প্রলয়কালে পরমাত্মার অয়ন অর্থাৎ স্থান হয়, এই জন্য পরমাত্মা নারায়ন শব্দে কথিত হইয়াছেন।
মহাভারত: শান্তি পর্ব ৩৩৪ অধ্যায়
তত্রাধ্যাত্মগতিং দেব একাকী প্রবিচিন্তয়্ন ।
বৈরাজসদনাম্নিত্যং বৈজয়ন্তং নিষেবতে ।।১০।।
অনুবাদ: ব্রহ্মা প্রত্যহ আধ্যাত্মচিন্তা করিতে থাকিয়া বৈরাজ নামক নিজ ভবন হইতে আসিয়া সেই বৈজয়ন্ত পর্ব্বতে অবস্থান করিতেন ।।১০।।
অথ তত্রাাসতস্তস্য চতুর্ব্বক্ত্রস্য ধীমত: ।
ললাট প্রভব: পুত্র: শিব আগাদ্যদৃচ্ছয়া ।।১১।।
অনুবাদ: তাহার পর একদা জ্ঞাণী ব্রহ্মা সেই বৈজয়ন্ত পর্বতে অবস্থান করিতে থাকিলে তাহার ললাট হইতে উৎপন্ন পুত্র মহাদেব(শিব) ঈশ্বরেচ্ছাক্রমে তাহার নিকটে আগমন করিলেন ।।১১।।
আকাশেন মহাযোগী পুরা ত্রিনয়ন: প্রভু: ।
তত: খান্নিপপাতাশু ধরণীধরমূর্দ্ধনি ।।১২।।
অনুবাদ: মহাযোগী ও প্রভাবশালী মহাদেব আকাশপথে আসিয়া সত্বরই সেই আকাশ হইতে বৈজয়ন্ত পর্বতের উপরে নিপতিত হইলেন ।।১২।।
অগ্রতশ্চাভবৎ প্রীতোববন্দে চাপি পাদয়ো: ।
তং পাদয়োর্নিপতিতং দৃষ্ট্বা সব্যেন পাণিনা ।। ১৩।।
উথ্থাপয়ামাস তদা প্রভুরেক: প্রজাপতি: ।
উবাচ চৈনং ভগবাংশ্চিরস্যগতমাত্মজম্ ।।১৪।।
অনুবাদ: ক্রমে মহাদেব ব্রহ্মার সম্মুখবর্ত্তী হইয়া প্রীতিবশত: তাঁহার চরণযুগলে প্রণত হইলেন, তখন ব্রহ্মা তাঁহাকে চরনযুগলে পতিত দেখিয়া, বামহস্তদ্বারা তাঁহাকে উঠাইলেন এবং প্রভাবশালী একাকী ভগবান্ ব্রহ্মা দীর্ঘকালের পর উপস্থিত সেই পুত্র মহাদেবকে বলিলেন।। ১৩-১৪।।
পিতামহ উবাচ:
স্বাগতং তে মহাবাহো! দিষ্ট্যা প্রাপ্তোহসি সেহন্তিকম্ ।
কচ্চিত্তে কুশলং পুত্র ! স্বাধ্যায়তপসো: সদা।
নিত্যমুগ্রতপাস্ত্বং হি তত: পৃচ্ছামি তে পুন: ।। ১৫।।
অনুবাদ: ব্রহ্মা বলিলেল- মহাবাহু! তোমার সুখে আগমন হইয়াছে ত? তুমি আজ ভাগ্যক্রমে আমার নিকট উপস্থিত হইয়াছো। পুত্র! তোমার বেদ পাঠ ও তপস্যার সর্ব্বদা মঙ্গল ত? তুমি সর্ব্বদাই ভীষণ তপস্যা করিয়া থাকো, সেই জন্যই আমি তোমার নিকট ইহা জিজ্ঞাসা করিতেছি।। ১৫।।
রুদ্র উবাচ:
ত্বৎপ্রসাদেন ভগবন্! স্বাধ্যায়তপসোর্ম্মম ।
কুশলঞ্চাব্যয়ঞ্চৈব সর্ব্বস্য জগতস্ত্বথ ।।১৬।।
শিব বলিলেন ভগবান্ আপনার অনুগ্রহে আমার বেদপাঠ ও তপস্যার এবং সমস্ত জগতের মঙ্গল ও স্থিতি চলিতেছে।।১৬।।
ব্রহ্মোবাচ:
বৈজয়ন্তো গিরিবর: সততং সেব্যতে ময়া ।
অত্রৈকাগ্রেণ মনসা পুরষশ্চিন্ত্যতে বিরাট্ ।।২১।।
অনুবাদ: আমি সর্বদা এই পর্বত শ্রেষ্ঠ বৈজয়ন্তের সেবা করি । এবং এখানে থাকিয়া একাগ্রচিত্তে বিরাট্ পুরুষের চিন্তা করিয়া থাকি ।২১।।
রুদ্র উবাচ :
বহব: পুরষা ব্রহ্মংস্ত্বয়া সৃষ্টা: স্বয়ম্ভুবা ।
সৃজ্যন্তে চাপরে ব্রহ্মন্ ! স চৈক: পুরুষ বিরাট্ ।।২২
শিব বলিলেন- ব্রহ্মণ! আপনি স্বয়ং উৎপন্ন হইয়া বহুপুরষ সৃষ্টি করিয়াছেন এবং অপরও অনেক পুরুষ সৃষ্টি করিতেছেন, আর সেই বিরাট পুরুষ এক । ২২।।
কো হ্যসৌ চিন্ত্যতে ব্রহ্মংস্ত্বয়ৈক: পুরুষোত্তম: ।
এতম্মে সংশয়ং ব্রুহি মহৎ কৌতূহলং হি মে ।।২৩।।
ব্রহ্মন্! আপনি যে এক পুরুষশ্রেষ্ঠের চিন্তা করেন, তিনি কে? আপনি আমার এই সন্ধিগ্ধ বিষয়ে বলুন; ইহা শুনিবার জন্য আমার গুরুতর কৌতুক জন্মিয়াছে ।।২৩।।
ব্রহ্মবাচ। (একবারে ৩০নং শ্লোকে) ।।২৪।।
মমান্তরাত্মা তব চ যে চান্যে দেহসংজ্ঞিতা: ।
সর্বেষাং সাক্ষিভুতোহসৌ ন গ্রাহ্য: কেনচিৎ ক্বচিৎ ।।৩০।।
অনুবাদ: আমার তোমার এবং অন্য যে সকল দেহী আছে তাঁহাদের তিনি অন্তরাত্মা এবং সকলেরই তিনি সাক্ষিস্বরুপ, কিন্তু কখনও কোন লোকই তাঁহাকে জানিতে পারেনা। ৩০।।
এবং হি পরমাত্মানং কেচিদিচ্ছন্তি পন্ডিতা: ।
একাত্মানাং তথাত্মানমপরে জ্ঞাণচিন্তকা: ৩৯।।
অনুবাদ: অনেক জ্ঞাণী এই পরমাত্মাকে এক(অখন্ড) মনে করেন; আবার অন্য জ্ঞাণীরা বহুতর বলিয়া ধারনা করিয়া থাকেন।।৩৯।।
তত্র য: পরমাত্মা হি স নিত্যং নির্গুণ: স্মৃত:
স হি নারায়ণো জ্ঞেয়: সর্বাত্মা পুরুষো হি স:।। ৪০।।
সেই উভয় মতেই যিনি পরমাত্মা তিনি সর্ব্বদাই নির্গুণ এবং এবং তাঁহাকে নারায়ণ বলিয়া জানিবে এবং তিনিই সকলের জীবাত্মা।।৪০।।
দেবা: সর্ব্বে মুনয়: সাধুশাস্তাস্তং প্রাগবংশে যজ্ঞভাগং যজন্তে ।
অহং ব্রহ্মা আদ্য ঈশ: প্রজানাং তস্মাজ্জাতস্ত্বঞ্চ মত্ত: প্রসূত: ।
মত্তো জগজ্জঙ্গমং স্থাবরঞ্চ সর্ব্বে বেদা: সরহস্যা হি পুত্র !।।৪৬।।
অনুবাদ: পুত্র! সমস্ত দেবতা ও সম্যক শমগুণান্বিত মুনিরা যজ্ঞালয়ে যজ্ঞভাগ দান করিয়া সেই নারায়নের পূজা করেন এবং সমস্ত লোকের আদিম ও নিয়ন্তা আমি ব্রহ্মা যাহা হইতে জন্মিয়াছি; আর তুমি আমা হইতে জন্মিয়াছ; তারপর স্থাবর জঙ্গমাত্মক সমস্ত জগৎ আামা হইতে উৎপন্ন হইয়াছে; আর বিধিমন্ত্রপ্রভৃতি সমেত সকল বেদ আমা হইতে আবির্ভাব লাভ করিয়াছে। ৪৬।।
মহাভারতে আরো কয়েক যায়গায় শিবকে ব্রহ্মার পুত্র বলা হয়েছে । এখানে ব্রহ্মাকে সয়ম্ভু বলার পরেও তার সৃষ্টি পরে হয়েছে নারায়ন থেকে। এছাড়া শিবের সহস্র নামে নারায়ন নামটি নাই।