Thursday, April 1, 2021

মহাদেবের পাশুপাত সকল অস্ত্র বিষ্ণুর প্রদান:

 কৃষ্ণ(নারায়ন) ও মহাদেব(পিনাকি) যুদ্ধ এবং মহাদেবের পাশুপাত সকল অস্ত্র বিষ্ণুর প্রদান:




কাশীরাজ নামে এক নৃপতি মহাদেবকে সন্তুষ্ট করাইয়া বর নিলেন যে জরাসন্ধকে হননকারি নারায়ন কে যেনো প্রহার করতে পারে। পিনাকিও তার প্রতি পরিতুষ্ট হইয়া বলিলেন “ হে অরিন্দম! তুমি রনক্ষেত্রে সেই কংসারি শ্রীকৃষ্ণকে পরাজিত করিতে পারিবে। আমিও তোমার সহিত বৃষারুঢ় হইয়া প্রমথগনের সহিত গমন করত যুদ্ধ করিব।” ২৯-৪৫। সেই রাজা শম্ভুসমীপে বরলাভে বীর্য শালী ও প্রমত্ত হইয়া প্রাপ্ত হইয়া যুদ্ধভুমিতে শঙ্কচক্র গদাধারী হরিকে আহবান করতে লাগলো। অন্তর্যামী ভগবান সবকিছু জানিতে পারিয়া কাশীদাশের বিনাস নিমিত্ত চক্রকে প্রেরন করিলো। কাশিদাশকে মস্তকসহ দগ্ধ করিয়া ফেলিলো। পশুপতি সকল বিষয় দর্শন করিয়া ক্রোধপ্রবন হইয়া প্রমথগনের সহিত বৃষারোহনপূর্বক স্বীয় ধনুগ্রহন করিয়া প্রমথগনের সহিত সেস্থলে গমন করিলো। সুদর্শন চক্র তার প্রমথগনকে দগ্ধ ও পাশুপাত অস্ত্রকে দহন করিয়া অঙ্গার-সদৃশ করিলো। পুরাকালে বিষ্ণু মহাদেবের ভক্তি দ্বারা পরিতোষিত হইলে বর দিয়েছিলেন যে, তোমাকতৃক স্বরনীয় হইলে তোমাকে অস্ত্র দ্বারা পরিপূর্ন করবো। কিন্তু এই অস্ত্র যদি আমার প্রতিকুলে ব্যবহার করো তাহলে অস্ত্রের আর তেজ থাকিবে না। ভয়ানক পাশুপাত অস্ত্র নিস্ফল ও বারানসী দগ্ধ হইলে বৃষভদ্বজ মহাদেব ভয়ে আদি পুরুষোত্তম ভগবানকে স্তব করিতে লাগলেন। হে নারায়ন তুমি পরম আশ্রয়, পরমাত্মাও পরতপর। তুমি নিত্য জ্ঞাণ, অনন্দস্বরুপ, নিরঞ্জন, জগতকারন। তোমাকে নমস্কার করি। তুমি গুনোত্রসভেদে সৃষ্টিস্থিতি ও প্রলয় কর্তা এবং তুমি নিজ মায়ায় গুপ্ত ও স্বপ্রকাশিত তোমাকে সমস্কার করি। তুমি অন্ত ও বহি: নহ কিন্তু বহি: ও অন্ত, দুরস্ত ও নিকটস্থ, গুরু ও লঘু, অতিশয় ক্ষুদ্র ও স্থুল হইয়াও স্থিত আছো। যিনি কটাক্ষপাতে কোটি কোটি ব্রক্ষ্মা ও অতুল পরাদ্র্সংখ্য আমাকে উতপন্য করিয়াছেন। যাহার কালেবরে এক একটি লোম সংখ্যায় ব্রক্ষ্মাণ্ডসমুদয় ধারন করেন সেই বিশ্বত্মাকে তোমাকে নমস্কার। আপনি ব্রক্ষ্মা সকলের দ্বারা প্রলয় ও উদ্ভব করিতেছেন। হে নাথ! আমি সৃষ্ট হইয়া তপস্যা দ্বারা তোমার প্রভাব জানিতে পারি নাই, অতএব আমি শরনাগত, আমার অপরাধ ক্ষমা পূর্বক পরিত্রাণ করুন। মহাদেবের স্তব শেষ হইলে শঙ্খচক্রধারি বিষ্ণু চক্ররুপ পরিত্যাগ করলেন।২৯-৬০। অন্যরকম ভাবে অবির্ভুত হলেন তার বাম পাশে লক্ষ্মী ও দক্ষীন পাশে সত্যভামা। ভগবান ক্রোধান্বিত হইয়া মহাদেবকে বলিলে এতকাল পরে কেনো তার নির্বুদ্ধিতা উদয় হলো? পূর্ব আমার বহুতর তপস্যা করিয়া আমারি শরীর রুপে উতপন্ন হইয়াছ। যদি গৌরির সহিত চিরকাল এমন রমন করিতে এবং বানারসী পুরিতে স্থিরতর থাকিতে ইচ্ছা কর, তবে আমার নামে বিখ্যাত যে পুরুষোত্তম ক্ষেত্র, তাহাতে গমন কর। হে ত্রিপুরান্তক! তুমি পার্বতির সহিত নির্ভয়ে বাস কর। সকল লোকের সৃষ্টিকর্তা আমার অনুমতিক্রমে তোমাকে কোটি-লিঙ্গের রাজত্ব পদে অভিষিক্ত করিবেন। নারদ কহিলেন মহাদেব স্কন্দদেশ অবনতপূর্বক কৃতাঞ্জলীপুটে তাহাকে বলিলেন – হে দেব! হে জগন্নাথ! হে প্রভো! তুমি আশ্রিত ব্যাক্তির ক্লেশ বিনস্ট কর, হে জগতপ্রভো! তুমিই আমার মুলাধার; অতএব তোমার অনুমতি পালন করাই আমার পক্ষে মঙ্গল। আপনার আদেশ শিরোধার্য্য করিয়া সেই মুক্তি পদ ক্ষেত্রে গমন করিবো। আমাকে সম্মতি প্রদান করুন।৬১-৮০ স্কন্দপুরান, বিষ্ণু খণ্ড।

No comments:

Post a Comment