Monday, August 30, 2021

বিষ্ণুর মাহাত্ম্য

 বিষ্ণুর মাহাত্ম্য:




স্বয়ম্ভূ শ্রেষ্ঠো রশ্মির্বর্চোদা অসি বর্চো মে দেহি। সূর্যস্যাবৃতমন্বাবর্তে।।

অনুবাদঃ হে জ্ঞানস্বরুপ সূর্যদেব তুমি স্বয়ম্ভূ, শ্রেষ্ঠ কিরণস্বরুপ তুমি, তেজের দাতা তুমি, আমাকে ব্রহ্মতেজ দাও। আমি সূর্যের আবর্তন অনুসরণ করে সৎকর্ম পালনে প্রবৃত্ত হই।
....... শুক্ল যজুর্বেদ ২/২৬


এই মন্ত্রে বিষ্ণুর শিপিবিষ্ঠ রুপটাকে স্বয়ম্ভূ বলা হয়েছে।


বেদে বিষ্ণুর সূর্য ছাড়াও অন্য রুপের বর্ণনা পাওয়া যায়


কিমিত্তে বিষ্ণো পরিচক্ষ্যং ভূৎপ্র যদ্ববক্ষে শিপিবিষ্টো অস্মি।
মা বর্পো অস্মদপ গূহ এতদ্যদন্যরুপ: সমিথে বভূথ।।

এই মন্ত্রে বিষ্ণুর শিপিবিষ্ট ছাড়াও অন্য রুপের কথা পাওয়া যায়।

................... ঋগ্বেদ ৭/১০০/৬



মন্ত্র: অস্তারমেষি সূর্য এবং মন্ত্রের দেবতা ইন্দ্র

এখানে শিপিবিষ্ট(সূর্য) রুপী ইন্দ্রের কথা বলা হচ্ছে।

................. ঋগ্বেদ ৮/৯৩/১




বিষ্ণবে শিপিবিষ্টায় স্বাহা, বিষ্ণবে নরন্ধিষায় স্বাহা



এখানে শিপিবিষ্ট (বিবস্বান/সূর্য্য) ও নরন্ধিষ
......... শুক্ল যজুর্বেদ ৮/৫৫।



নিরুক্তিকার যাস্কও বিষ্ণুর দুই রুপের কথায় বলেছেন।





সবিতুশ্চ বিষ্ণোরা সূর্যা

অনুবাদঃ দীপ্তিময় সবিতা, বিষ্ণু ও সূর্য
....... ঋগ্বেদ ১০/১৮১/০৩।

এই মন্ত্রে সবিতা, বিষ্ণু ও সূর্য্য আলাদা তাই স্পষ্টভাবে প্রমান হয় মহাবিষ্ণু অন্য রুপেও বিদ্যমান।



বীভৎসূনাং সযূজং হংসমাহুরপাং দিব্যানাং সখ্যে চরন্তম্।
অনুষ্টুভমনু চর্চূর্যমাণমিন্দ্রং নি চিক্যুঃ কবয়ো মনীষা।। ৯।।




অনুবাদঃ সে সকল ভীত দিব্যজলের সঙ্গী হয়ে যিনি তাদের বন্ধুত্ব আচরণ করেন, তাঁকে হংস বা সূর্য্য বা ইন্দ্র বলে। তিনি স্তবের যোগ্য, তিনি জলের পশ্চাৎ-পশ্চাৎ ভ্রমণ করেন। বিদ্বানগণ বুদ্ধিবলে তাকে ইন্দ্র বলে স্থির করেছেন।।

.......................১০/১২৪/৯।। ঋগ্বেদ।।

এই মন্ত্রে জলের সঙ্গী হংসই শিপিবিষ্ঠ(সূর্য্য) ও ইন্দ্র। আমরা সকলেই জানি নররুপি পরমাত্মা জলকে ধারন করেন বলে তাকে নারায়ন বলা হয়।



তমিদগর্ভং প্রথমং দ্রধ্র আপো যত্র দেবাঃ সমগচ্ছন্ত বিশ্বে। অজস্য নাভাবধ্যেকমর্পিতং যস্মিন বিশ্বানি ভুবনানি তস্থুঃ।।

অনুবাদঃ সৃষ্টির আদিতে বিদ্যমান পরমতত্ত্ব জলকে গর্ভ ধারন করেছিলেন। সকল দেবতাদের আশ্রয়স্থল ছিলেন। ঐ অজন্মা ঈশ্বরের নাভীকুণ্ডে এক পরম তত্ত্ব অধিষ্ঠিত যাতে সকল ভূবন স্থিত হয়ে আছে।
........... যজুর্বেদ ১৭/৩০




য ইমা বিশ্বা ভূবনানি জুহ্বদৃষির্হোতা ন্যসীদৎ পিতা নঃ। স অাশিষা দ্রবিণমিচ্ছমানঃ প্রথমচ্ছদবরাঁ আ বিবেশ।।

অনুবাদঃ যিনি সর্বজ্ঞ, সংহার যজ্ঞের হোতা, আমাদের ( প্রাণীদের) পিতা পরমেশ্বর প্রলয়কালে সকল ভুবন সংহার করে একাকী ছিলেন, তিনি পুনরায় সৃষ্টির ইচ্ছায় উৎকৃষ্ট রুপ প্রকাশ করে তাতে প্রবেশ করলেন।
........... যজুর্বেদ ১৭/১৭



আমরা সকলেই জানি মনুসংহিতা অনুসারে জলই নররুপি পরমাত্মার অয়ন হয়, তাই তাকে নারায়ন বলা হয়।



.................... মনু সংহিতা ১/১০।



হংসরুপী পরমাত্মা বিষ্ণু/ নারায়নেরই স্বরুপ।



আর নারায়নই ব্রহ্ম এটা তৈতেরিয় আরন্যকে রয়েছে।


সহস্রশীর্ষ দেবং বিশ্বাক্ষং বিশ্বশংভুবম।
বিশ্বং নারায়নং দেবমক্ষরং পরমং পদম্।
বিশ্বতঃ পরমন্নিত্যং বিশ্ব নারায়নঁহরিম্।
বিশ্বমেবেদং পুরুষস্তদ্বিশ্বভুপজীবতি।




পতিং বিশ্বস্যাত্মেশ্বরঁ শ্বাশতং শিবমচ্যুতম্।
নারায়ণং মহাজ্ঞেয়ং বিশ্বাত্মানং পরায়ণম্।





নারায়নঃ পরো জ্যোতিরাত্মা নারায়ণঃ পরঃ।
নারায়ণঃ পরং ব্রহ্মতত্ত্বং নারায়ণঃ পরঃ।
নারায়ণঃ পরো ধ্যাতা ধ্যানং নারায়নঃ পরঃ।
যচ্চ কিংচিজ্জগথ্সর্বং দ্দ্যুহ্যতে শ্রুয়তেঽপি বা।
অন্তর্বহিশ্চ তৎসর্ব ব্যাপ্য নারায়ণস্থিতঃ।।


এখানে নারায়ন যে ব্রহ্ম সেটা স্পস্টীকরন করে দিয়েছে।


নবদ্বারে পুরে দেহী হংসো লেলায়তে বহি:।
বশী সর্বস্য লোকস্য স্থাবরস্য চরস্য চ।।

অনুবাদ: স্থাবর ও জঙ্গমাদি সমস্ত লোকের নিয়ন্তা সেই হংস(পরমাত্মা) নবদ্বার বিশিষ্ট দেহপুরে দেহীরূপে অবস্থিত থাকিয়া বহির্জগতের বিষয় গ্রহন করেন।

................ শ্বেতাশ্বতর উপনিষধ ৩/১৮।



এই মন্ত্রে স্পস্ট করে দিয়েছে পরমাত্মা কে। আর নতুন করে ঠেলাঠেলির প্রয়োজন নেই।


অনেকে বলতেই পারেন তাহলে শ্বেতাশ্বতরের ৩/২ এ বলা হয়েছে রুদ্র ছাড়া দ্বিতীয় কেউ নেই তাহলে এটাকে কিভাবে ব্যক্ষা করবেন?


আসুন দেখে নেওয়া যাক

একো হংসো ভুবনস্যাস্য মধ্যে স এবাগ্নি: সলিলে সন্নিবিষ্ট:।

তমেব বিদিত্বাহতিমৃত্যুমেতি নান্য: পন্থা বিদ্যতেহয়নায়।।


অনুবাদ: এই ভুবনের মধ্যে একমাত্র হংস(পরমেশ্বর) বিদ্যমান আছেন। তিনিই জল পরিণাম এই দেহে অবিদ্যাদির দাহক অগ্নিরুপে অবস্থিত। তাহাঁকে জানিয়াই সাধক মৃত্যুকে অতিক্রম করেন, এই পরমপদ প্রাপ্তির আর কেনোও পথ নাই।

............... শ্বেতাশ্বতর উপনিষধ ৬/১৫


এই মন্ত্রেও বলছে ভুবন মধ্যে একমাত্র হংসই ছিলো।

এখানে (বিষ্ণুর অবতার হংস ও রুদ্র যদি দুই জন ভিন্ন হয় তাহলে স্ববিরোধ হয়ে যায়। এ সমস্যা নিরোষনের জন্য আমাদেরকে অন্য মন্ত্রের সাহায্য নিতে হবে।



আসুন স্ববিরোধ নিরোষনের নিস্পত্তি করা যাক,

প্রতদ্বিষ্ণুঃ স্তবতে বীর্ষেণ মৃগো ন ভীমঃ কুচরো গিরিষ্ঠাঃ। যস্যোরষু ত্রুিষু বিক্রমণেম্বধিক্ষিপন্তি ভুবনানি বিশ্বা। তস্মাদুচ্যতে নৃসিংহমিতি।।


ছবিটি রামকৃষ্ণ মিশনের অনুবাদিত নৃসিংহতাপনীয়পনিষৎ

অনুবাদঃ তাঁর(বিষ্ণুর) বীর্যধিক্যের জন্য ( পৃথিবী, অন্তরিক্ষ ও স্বর্গলোক)সমস্ত লোকে তাঁকে স্তব করে তিনি সিংহরুপী হয়েও ভয়ঙ্কর নন। তিনি কখনও কোনও এক স্থানে থাকেন না তিনি পর্বতেশ্বর। তাঁর ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরুপী ত্রিবিধ শরীরে এই সুকল ভুবন নিবাস করে। তাই তাঁকে নৃসিংহ বলা হয়।।
........ শুক্লযজুর্বেদ ৫/২০ ও অথর্ববেদীয় নৃসিংহতাপনীয়পনিষৎ ২/৫/৯



এখানে নৃসিংহরুপি পরমাত্মাই থেকে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর রপে থাকেন। এই মন্ত্র স্পস্টিকরন করে দিয়েছে যে নৃসিংহ রুপি মহাবিষ্ণুই ব্রহ্মা-বিষ্ণু-রুদ্র। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-রুদ্রে কোনো লীলাস্বরুপে ভেদ থাকলেও তত্ত্ব একই ব্রহ্ম।


যদি বলেন তাহলেও শ্বেতাশ্বতর উপনিষধের ৩/২ এর ব্যক্ষার আপত্তি নিস্পত্তি হয়না। তাহলে বলবো, আসুন নতুন করে দেখে নেওয়া যাক




অস্য দেবস্য মীড়হুষো বয়া বিষ্ণোরেসষ্য প্রভুতে হবির্ভি: ।
বিদে হি রুদ্রো রুদ্রিয়ং মহিত্বং যাসিষ্টং বর্তিরশ্বিনাবিরাবৎ।।

অনুবাদ: অন্যদেবগণ যজ্ঞে হব্যদ্বারা প্রাপনীয় আর অভিষ্ঠদাতা বিষ্ণুর শাখা/অংশ স্বরুপ। রুদ্র রুদ্রীয় মহিমা প্রদান করেন। আশ্বীদ্বয়! তোমরা আমাদের হব্যযুক্ত গৃহে এস।
............ ঋগ্বেদ ৭/৪০/৫




বিষ্ণোর্নু কং প্রা বোচং বীর্যাণি যঃ পার্থিবানি বিমমে রজাংসি। যো অস্কভায়দুত্তরং সধস্থং বিচক্রমাণস্ত্রেধোরুগায়ঃ।।


অনুবাদঃ সর্ব ব্যাপক প্রভু বিষ্ণুই সর্ব বীরকর্ম করেন। প্রভুই সব অগ্নি, বিদ্যুৎ, সূর্যরুপ জ্যোতির নির্মান করেন। স্বর্গও ধারন করেন। পৃথিবী, অন্তরীক্ষ, দ্যূলোকেরও গতি দিয়ে শীঘ্র গমন করেন।

তথাকথিত আর্য সমাজি হরিশরন স্বীদ্ধান্তলংকার এর ভাষ্য(ভাবার্থ)
......... অথর্ববেদ ৭/৩/১/৪ অথবা ৭/২৬/১


এখান থেকে আমরা দেখলাম বিষ্ণুই অগ্নি ও ‍সূর্য্যের সৃজন করেন।



তব শ্রিয়ে মরুতো মর্যয়ন্ত রুদ্র যত্তে জনিম চারু চিত্রম্।
পদং যদ্বিষ্ণোরুপমং নিধায়ি তেন পাসি গুহ্যং নাম গোনাম্।।

অনুবাদঃ হে অগ্নি! তোমার আশ্রয়ার্থে মরুৎগণ অন্তরীক্ষকে মার্জনা করেন। হে রুদ্র! তোমার জন্য বিচিত্র মনোহর বিষ্ণুর যে অগম্য পদ অর্থাৎ অন্তরীক্ষ স্থাপিত হয়েছে, তা দিয়ে তুমি উদকের(জলের) গুহ্য নাম পালন করো।
...........ঋগ্বেদ ৫/৩/৩

এখানে জলের গুহ্য নাম অর্থে নারায়নকেই বুঝিয়েছে।


এখান থেকে স্পস্ট বোঝাই যাচ্ছে শ্বেতাশ্বতর উপনিষদের রুদ্রের একা অবস্থান ভিন্ন কোনো দেবতাকে উদ্দেশ্য করে বলা হচ্ছেনা। এখানে বিষ্ণুরই রুদ্রীয় শক্তির একাকি অবস্থানের কথা বলা হচ্ছে। কারন বিষ্ণুই রুদ্র, বিষ্ণু ও রুদ্র একই।



বেদে বিষ্ণুরই কীর্তন করতে বলা হয়েছে। বিষ্ণুরই উদ্দেশ্যে হব্য প্রদান করতে বলা হয়েছে।

আস্য জানান্তো নাম চিদ্বিবক্তন মহস্তে বিষ্ণো সুমতিং ভজামহে

এখানে বিষ্ণুর নাম জেনে কীর্তন করতে বলা হয়েছে। বিষ্ণুর সুমতি হোক বলা হয়েছে।

.................... ঋগ্বেদ ১/১৫৬/৩


স এষ যে চৈতস্মাদর্বাঞ্চো লোকাস্তেষাং চেষ্টে মনুষ্যকামানাং চেতি তদ্ য ইমে বীণায়াংগায়স্ত্যেং তে গায়ন্তি তস্মাত্তে ধনসনয়ঃ।।


অনুবাদঃ আধ্যাত্মিক আত্মা হইতে অধস্তন যে সকল লোক আছে, চাক্ষুষ পুরুষ সেই সমুদয় লোকের ঈশ্বর এবং মনুষ্যদিগের কামনারও ঈশ্বর। বীণা-সংযোগে গান করে, তাহারা ইহারই গান করে এজন্য তাহারা ধনবান হইয়া থাকে।
........ ১/৭/৬ ছান্দোগ্য উপনিষদ



বিষ্ণুং স্তোমাস: পুরদস্মমর্কা ভগস্যেব কারিণো যামণি গ্মন্।

এখানে বিষ্ণু স্তোত্র, শস্ত্র ও যজ্ঞ বিষ্ণুর নিকট গমনের কথা বলা হচ্ছে।

................... ঋগ্বেদ ৩/৫৪/১৪



য: পূর্বায় বেধসে নবীয়সে সুমজ্জানয়ে বিষ্ণবে দদাশতি

এখানে বিষ্ণুকে হব্য প্রদানের কথা বলেছেন।
................... ঋগ্বেদ ১/১৫৬/০২



নূ মর্তো দয়তে সনিষ্যন্যো বিষ্ণব উরুগয়ায় দাশ।
প্র য: সত্রাচা মনসা যজাত এতোবন্তং নর্যমাবিবাসাৎ।।

এখানে কীর্তনীয় বিষ্ণুকে হব্য দান করেন, যিনি যুগপৎ স্ত্রোত দ্বারা পূজা করার কথা রয়েছে।
.................. ৭/১০০/১



যো ব্রহ্মাণং বিদধাতি পূর্বংষো বৈ বেদাংশ প্রহিণোতি তস্মৈ।
তং হ দেবমাত্মবুদ্ধিপ্রকাশং মুমুক্ষুর্বৈ শরণমহং প্রপদ্যে।।

অনুবাদঃ যিনি সৃষ্টির প্রথমে ব্রহ্মাকে সৃষ্টি করিয়াছেন, যিনি তাঁহার উদ্দেশ্যে বেদবিদ্যা প্রেরণ করিয়াছেন, আত্মবিষয়ক বুদ্ধির প্রকাশময় সেই পরমেশ্বরের (অথবা প্রসন্নতাকারী দেবের) নিকট মুক্তিকামী আমি শরণপন্ন হইয়াছি।
........ শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ ৬/১৮


যো ব্রহ্মাণং বিদধাতি পূর্ব্বং যো বিদ্যান্তস্মৈ গোপায়তিস্ম কৃষ্ণঃ।
তং হ দেবমাত্মবুদ্ধিপ্রকাশং মুমুক্ষুর্বৈ শরণমনুব্রজেৎ।।

অনুবাদঃ ব্রহ্মা কহিলেন, বৎসগণ! যে পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ সৃষ্টি কালীন ব্রহ্মাকে রচনা করিয়াছেন এবং তদর্থ মৎস ও হয়গ্রীবদি ধারণ পুর্ব্বক প্রলয়পয়োধি জল হতে গোপালবিদ্যাত্নক বেদগনকে রক্ষা করত তাঁহাকে উপদেশ করিয়াছেন, সেই আত্নবুদ্ধিপ্রকাশক দেবকে মোক্ষার্থী হইয়া আশ্রয় করিবে।।।
......... গোপালতপানি উপনিষদ ১/২৪

No comments:

Post a Comment