Thursday, May 12, 2022

মহাদেবের কৃষ্ণ মন্ত্র জপ:

শিবের কৃষ্ণ মন্ত্র জপ:




মহাদেবের কৃষ্ণ মন্ত্র জপ, গোবিন্দের নিত্য ভজন ও জপ, বিষ্ণুই শিবের অদি গুরু । শিব – পার্বতী বৈষ্ণব ও বৈষ্ণবী । বিষ্ণুর পা শিবের মস্তকে ধারন ।


শ্রীমহাদেব উবাচ:


কৃষ্ণেন ব্রহ্মণে দত্তং গোলোকে বিরাজতটে
নিরাময়ে ব্রহ্মলোকে মহ্যং দত্তঞ্চ ব্রহ্মণা ।। ১৩।।

অনুবাদ: এই পঞ্চরাত্র মন্ত্রজ্ঞান পূর্বে গোলোকে বিরজাতটে শ্রীকৃষ্ণ ব্রহ্মাকে প্রদান করেন, তদনন্তর নিরাময় ব্রহ্মলোকে ব্রহ্মা আমাকে প্রদান করেন।
………… দ্বিতীয় রাত্র প্রথম অধ্যায় শ্লোক নং ১৩



শ্রীমহাদেব উবাচ:

ময়া শ্রীকৃষ্ণমন্ত্রশ্চ কৃষ্ণালয়ে মুনে পুরা
গোলোকে বিরজাতীরে নীরে ক্ষীরনিভেহমহলে ।।১৯।।

অনুবাদ: হে মুনে! পূর্ব্বে কৃষ্ণালয় গোলোকে বিরজাতীরে ক্ষীরসদৃশ অমল জলে শ্রীকৃষ্ণমন্ত্র জপ করিয়াছি ।
……………… দ্বিতীয় রাত্র, দ্বিতীয় অধ্যায় শ্লোক নং ১৯



মহাদেব উবাচ:

তমেব তপসা নিত্যং ভজামি স্তৌমি চিন্তয়ে
তেনাদ্বিতীয়মহিমো জগৎপূজ্যোহস্মি পার্ব্বতি ।।৪।।

অনুবাদ: হে পার্বতী, আমি তপস্যা দ্বারা তাহাকেই ( শ্রীহরি/ গোবিন্দ) নিত্য ভজনা, স্তব এবং ধ্যান করিয়া থাকি, তাহাতেই আমি জগৎপূজ্য এবং অদ্বিতীয় মহিমান্বিত হইয়াছি ।
…………… চতুর্থ রাত্র তৃতীয় অধ্যায় শ্লোক নং ০৪।



পার্বতী মহাদেবকে বলছে:

অহো সর্ব্বেশ্বরো বিষ্ণু: সর্ব্বদেবোত্তমোত্তম:
ভবদাদিগুরুর্ম্মূঢ়ৈ: সামান্য ইব লক্ষ্যতে ।।

অনুবাদ: বিষ্ণুই সকলের ঈশ্বর ও তিনিই সর্বোৎকৃষ্ট দেবতা এবং আপনার(শিব) আদিগুরু হন। অহো! মুঢ়জনেরা সামান্য বোধ করিয়া থাকে।
……………… চতুর্থ রাত্র তৃতীয় অধ্যায় শ্লোক নং ২১০।



মহাদেব উবাচ:

বৈষ্ণবানাং বৈষ্ণবীনাং যথাহং ত্বং তথা পরা ।
আশ্রমাণাং যথা ন্যাস: সিদ্ধানাং কপিলো যথা ।।

অনুবাদ: আর বৈষ্ণব ও বৈষ্ণবীদের মধ্যে যেমত আমি এবং তুমিও আশ্রম মধ্যে যেমত সংন্যাস এবং সিদ্ধগণের মধ্যে কপিলদেব শ্রেষ্ঠ হয়েন ।
……………… চতুর্থরাত্র, প্রথম অধ্যায়, শ্লোক ০৫



মহাদেব পার্বতীকে বলছে:

নাস্তি বিষ্ণো: পরং জ্ঞাণং নাস্তি মোক্ষো হ্যবৈষ্ণব: ।
নাস্তি বিষ্ণো: পরো মন্ত্রো নাস্তি বিষ্ণো: পরং তপ : ।।২০০।।

নাস্তি বিষ্ণো: পরং ধ্যানং নাস্তি মন্ত্রো হ্যবৈষ্ণব: ।
কিন্তস্য বহ্যভির্ন্মস্ত্রৈ: কিং জেপৈর্ব্বহুবিস্তরৈ: ।। ২০১।।


অনুবাদ: বিষ্ণু হইতে অন্য পরম জ্ঞাণ নাই অবৈষ্ণব মুক্তিও নাই বিষ্ণু হইতে অন্য আর মন্ত্র নাই, তপস্যাও আর নাই।।২০০।।
বিষ্ণু হইতে শ্রেষ্ঠ ধ্যান নাই, অবৈষ্ণব মন্ত্রও নাই, অপিচ তাহার মন্ত্র কিম্বা জপ বাহুল্যে প্রয়োজন কি? ।।২০১।।
………………… চতুর্থ রাত্র, তৃতীয় অধ্যায় শ্লোক ২০০-২০১



শ্রী শিব উবাচ:

অকালমৃত্যুহরণং সর্ব্বব্যাধীবিনাশনম্
বিষ্ণো পাদোদকং পুণ্যং শিরসা ধারয়াম্যহম্ ।।

অনুবাদ: অকালমৃত্যনিবারক, সকল ব্যাধিনিনাশক শ্রীবিষ্ণুর পবিত্র পাদোদক মস্তকে ধারণ করিতেছি ।
.......…………… চতুর্থ রাত্র এগারো অধ্যায় শ্লোক নং ২০।



শ্রী মহাদেব উবাচ:

যশ্চক্রং নিজকেলিসাধনমধিষ্ঠানস্থিতোহপি প্রভু-
র্দ্দ্ত্তং মম্মথশত্রুণাহবনকৃতে ব্যাকৃত্তলোকোত্তরং ।
ধত্তে দীপ্তনবেন্দুভানুনয়নোপেতাদ্ভ্রমায়ং ধ্রুবং
বন্দে কায়বিমর্দ্দনং বধকৃতাং ভক্তিপ্রদং যাদবাং ।।২৬।।

অনুবাদ: যে প্রভু অধিষ্ঠানস্থিত হইয়াও নিজকেলি সাধনস্বরুপ সুদর্শন চক্রধারন করিতেছেন এবং যিনি কন্দর্পশক্রু মহাদেবকেও লোকের প্রভুত্ত প্রদান করিয়াছেন সেই ভক্তিদাতা যদুবংশের অধিপতি শ্রীকৃষ্ণের বন্দনা করিতেছি ।।
…………… পঞ্চমরাত্র চতুর্থ অধ্যায় শ্লোক ২৬



পঞ্চরাত্র মানবেন কিনা প্রশ্ন উঠতে পারে দেখা যাক পঞ্চরাত্র নিয়ে অন্যকোথাও কিছু লেখা আছে কিনা-



১) পঞ্চরাত্রস্য কৃৎস্নস্য বেত্তা তু ভগবান্ স্বয়ম্ ।
সর্বেষু চ নৃপশ্রেষ্ঠ ! জ্ঞাণেন্বেতেষু দৃশ্যতে ।। ৬৭।।


অনুবাদ: রাজশ্রেষ্ঠ ! ভগবান্ স্বয়ং নারায়নণই সমস্ত পাঞ্চরাত্র শাস্ত্রের বক্তা এবং সকল শাস্ত্রে সমস্ত বিষয়ই দেখিতে পাওয়া যায়।
…… ৩৩৩ অধ্যায়, শান্তি পর্ব, মহাভারত।



২) কৃষ্ণযজুর্বেদ(তৈতরিয় সংহিতা) ৭ম কান্ড, ১ম প্রপাঠক, ১০ম মন্ত্র----- এখানে পঞ্চরাত্র যাগের বিধান রয়েছে।


৩) শতপথ ব্রাহ্মনে ১৩.৬.১ এ পঞ্চরাত্র যাগের বিধান রয়েছে।


৪) শঙ্করাচার্য তার বেদান্তসুত্রে ২/২/৪২ এ পঞ্চরাত্র অনুসারে উপাসনার উদ্ধৃতি দিয়েছেন । বেশিরভাগ শৈবমতালম্বীরা এটাকে বৈষ্ণব মত খন্ডন হিসাবে ব্যাবহার করেন কিন্তু বাস্তবে এটা শাক্ত মত খন্ডনে বর্তায় বৈষ্ণব মত নয় ।


৫) আহিরবুধনিয়া সংহিতা, সত্য সংহিতা, ঈশ্বরা সংহিতা, পচকারা সংহিতা ইত্যাদিতে পঞ্চরাত্র সম্পর্কে উদ্ধৃতি আছে । রামানুচার্যের পঞ্চরাত্র আগমের আহিরবুধনিয়া সংহিতার ভাষ্য আছে ।









No comments:

Post a Comment