Tuesday, December 14, 2021

গীতা পূর্বেই ছিলো নাকি মহাভারতের অংশ হিসাবে এসেছে?

গীতা পূর্বেই ছিলো নাকি মহাভারতের অংশ হিসাবে এসেছে?




অনেকেই বলেন গীতা মহাভারতের অংশ কারন মহাভারত থেকে গীতাকে আলাদা করা হয়েছে। কিন্তু এই যুক্তি সাপোর্ট করলে নিচে উল্লেখিত গীতার শ্লোকটিকে বিকৃত বলিতে হবে। কিন্তু গীতা বিকৃত কিংবা প্রক্ষিপ্ত হতেই পারেনা কারন গীতাকে পরম্পরা গত জগৎগুরু আচার্য্যরা সর্ব্বোচ্চ মুল্যবান হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। 


শ্রীভগবানুবাচ,

ইমং বিবস্বতে যোগং প্রোক্তবানহমব্যয়ম্।

বিবস্বান্ মনবে প্রাহ মনুরিক্ষ্বাকবেহব্রবীৎ।।

এবং পরম্পরাপ্রাপ্তমিমং রাজর্ষয়ো বিদুঃ।

কালেনেহ মহতা যোগো নষ্টঃ পরন্তপ।।




অনুবাদ: শ্রীভগবান্বলিলেনএই অব্যয় যোগ আমি সূর্য্যকে বলিয়াছিলাম। সূর্য্য (স্বপুত্র) মনুকে এবং মন্য (স্বপুত্র) ইক্ষ্বাকুকে ইহা বলিয়াছিলেন। এইরূপে পুরুষপরম্পরা প্রাপ্ত এই যোগ রাজর্ষিগণ বিদিত ছিলেন। হে পরন্তপ, ইহলোকে সেই যোগ দীর্ঘকালবশে নষ্ট হইয়াছে।

............. গীতা ৪/(১-২)


তাহলে গীতার সময়কাল কতো?


গীতার সময়কাল বের করতে আমাদের এই বিবস্বান থেকে মনু ও ইক্ষ্বাকু এই সময়কাল বের করিতে হইবে। আসুন দেখে নেই 


ত্রীণ্যপত্যানি ভো বিপ্রা: সংজ্ঞায়াংতপতাং বর:।

আদিত্যো জনয়ামাস কন্যাং দ্বৌ চ প্রজাপতী

মনুর্বৈবস্বত: পূর্ব্বং শ্রাদ্ধদেব: প্রজাপতি:।

যমশ্চ যমুনা চৈব যমজৌ সস্বভূবতু:।

 


অনুবাদ: সজ্ঞার গর্ভে বিবস্বানের অপত্য উৎপন্ন হয়, তন্মধ্যে একটি কন্যা এবং দুইটি পুত্র। তাঁহার দুই পুত্রই প্রজাপতি ছিলেন। তাঁহাদের একের নাম বৈবস্বত মনু এবং শ্রাদ্ধদেব। কন্যার নাম যমুনা। যমুনা ও যম যমজ হইয়াছিলেন।

…………… ৮নং শ্লোক, ৬অধ্যায়, ব্রহ্মপুরান।

 






লোমহর্ষন উবাচ,

মনোর্বৈবস্বতস্যাসন্ পুত্রা বৈ নব তৎসমা:।

ইক্ষ্বাকুশ্চৈব নাভাগো ধৃষ্ট: শর্যাতিরেব চ।।

নরিষ্যন্তশ্চ ষষ্ঠো বৈ প্রাংশূ রিষ্টশ্চ সপ্তম:।

করুষশ্চ পৃষধ্রশ্চ নবৈতে মুনিসত্তমা:।



অনুবাদ: লোম হর্ষন কহিলেন, হে মুনবরগণ! বৈবস্বত মনুর আত্মসম নয়টি পুত্র উৎপন্ন হয়। তাহাদের নাম ইক্ষ্বাকু, নাভাগ, ধৃষ্ট, শর্যাতি, সরিষ্যন্ত, প্রাংশু, রিষ্ট, করুষ, পৃষধ্র।

…………… ১নং শ্লোক, ৭অধ্যায়, ব্রহ্মপুরান।




এখান থেকে বোঝা গেলো এই বিবস্বান অর্থাৎ সুর্য্য দেব। অনেকেই এখন বলিতে পারেন যে পুরানের বক্তব্য আমি বা আমরা মানিনা। তাহলে আসুন দেখে নেই আর কোথাও এই সম্পর্কে কিছু রয়েছে কিনা?

আসুন বাল্মীকি রামায়ন কি বলে দেখে নেওয়া যাক,



পুরা কৃতযুগে রাম মনুর্দণ্ডধরঃ প্রভুঃ

তস্য পুত্রো মহানাসীদিক্ষ্বাকুঃ কুলনন্দনঃ।।

 

অনুবাদঃ শ্রীরাম! পূর্বের সত্যযুগের কথা, দণ্ডধারী রাজা মনু এই ভূতল শাসন করতেন তাঁর এক শ্রেষ্ঠ পুত্র ছিল, নাম হল ইক্ষ্বাকু রাজকুমার ইক্ষ্বাকু তাঁর কুলকে আনন্দে ভরে রাখতেন 

........... ০৫নং শ্লোক, ৭৯অধ্যায়উত্তর কাণ্ড, বাল্মিকী রামায়ন


এখান থেকেও বোঝা গেলো মনু পুত্রই ইক্ষ্বাকু।


কৃষ্ণই যে সূর্য্যদেবকে গীতার অব্যয় যোগ বলেছিলেন তার আরেকটি প্রমান:


কিঞ্চান্যদ্ বক্তুমিচ্ছামি রাক্ষসেন্দ্র মহাবল

আরধয় জগন্নাথমিক্ষ্বাকুকুলদৈবতম্।।

 

অনুবাদঃ মহাবলী রাক্ষসরাজ! এছাড়া আমি তোমাকে আরও একটি কথা বলতে চাই আমাদের ইক্ষ্বাকুকুলের দেবতা হলেন ভগবান জগন্নাথ (শ্রীশেষশায়ী ভগবান বিষ্ণু)


........... ৩০নং শ্লোক, ১০৮অধ্যায়,  উত্তর কাণ্ড, বাল্মীকি রামায়ণ।


জগন্নাথ যে কে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।

ব্রহ্ম বৈবর্ত: জয় জগন্নাথ (brahma-vaivarta-special.blogspot.com)

যদি কনফিউশন থাকে তাহলে এই লিংকে গেলে সেই কনফিউশনও দুর হবে।



এখন বলবেন বাল্মীকি রামায়নের উত্তরকান্ড মানিনা। তাহলে বলিতে হয় আপনারা বাল্মীকি রামায়নই মানেন না। আসুন দেখে নেই বাল্মীকি রামায়নের বালকান্ড থেকে উত্তরকাণ্ডের রেফারেন্স।


চতুর্বিশৎ-সহস্রাণি শ্লোকানামুক্তবান্ ঋষি:।

তথা সর্গশতান্পঞ্চ ষট্ কাণ্ডানি ততোত্তরম্।।

কৃত্বা তু তন্ময়প্রাজ্ঞ: সভবিষ্যং সহোত্তরম্।

চিন্তয়ামাস কো ন্বেতৎপ্রযুঞ্জীয়াদিতি প্রভু:।।



অনুবাদ: এই কাব্যে মহর্ষি চব্বিশ হাজার শ্লোক, পাঁচ শত সর্গ এবং ছয়টি কান্ড ও উত্তর কান্ড (উত্তর কান্ড সহ মোট সাত কান্ড) রচনা করেন। মহাপ্রাজ্ঞ মহর্ষি বাল্মীকি শ্রীরামচন্দ্রের ভবিষ্যৎ কর্মধারাসহ, উত্তরকাণ্ড সমন্বিত সেই মহাকাব্য রচনা করার চিন্তা করতে লাগলেন- এমন কে আছে যে এই কাব্য জনসমাজে প্রচার করতে সমর্থ!


……………… (০২-০৩)নং শ্লোক, ৪র্থ স্বর্গ, বালকাণ্ড, বাল্মীকি রামায়ন।


এখন বলিতে পারেন কৃষ্ণের জন্ম দ্বাফরে সে কিভাবে সূর্যদেবকে গীতার অব্যয় যোগের জ্ঞান দ্বান করলেন?


কৃষ্ণের স্বরুপ বুঝিলে এমন কথা বলিতেন না। তারপরেও কনফিউশন দুর করিবার জন্য দেওয়া হলো


উৎপৎস্যতে হি লোকেহস্মিন্ যদূনা কীর্তিবর্ধনঃ।।২০।।

বাসুদেব ইতি খ্যাতো বিষ্ণু পুরুষবিগ্রহঃ

তে মোক্ষয়িতা শাপাদ্  রাজংস্তস্মাদ্ ভবিষ্যসি।।২১।।

কৃতা তেন কালেন নিস্কৃতিস্তে ভবিষ্যতি

ভারাবতরণার্থং হি নরনারায়ণাবুভৌ।।২২।।

উৎপৎস্যেতে মহাবীর্যৌ কলৌ যুগ উপস্থিতে

 

অনুবাদঃ যদুকুলের কীর্তি বৃদ্ধিকারী বাসুদেব নামে সুবিখ্যাত ভগবান শ্রীবিষ্ণু পুরুষ বিগ্রহে এই জগতে অবতীর্ণ হয়ে আসবেন, তখন তিনিই এই শাপ থেকে আপনাকে মুক্ত করবেন অতএব এখন থেকে আপনি গিরগিটি হয়েই অবস্থান করুন শ্রীকৃষ্ণ অবতীর্ণকালে  আপনার উদ্ধার হবে কলিযুগ আসার কিছু আগে মহাপরাক্রমী নর নারায়ণ এই পৃথিবীর ভার লাঘব হেতু অবতীর্ণ হবেন

......... (২০.-২৩.)নং শ্লোক, ৫৩অধ্যায়, উত্তর কান্ড, বাল্মিকী রামায়ণ


এখানে দেখা যায় বিষ্ণু বাসুদেব বিগ্রতে দ্বাফরে অবতীর্ণ হন। গর্গ মুনি কৃ্ষ্ণকে চিনিতে পারিয়া বিষ্ণুকে কৃষ্ণই নামই প্রদান করেন।


ব্রহ্ম বৈবর্ত: October 2021 (brahma-vaivarta-special.blogspot.com)


নিন কনফিউশন দুর করিবার জন্য একটি লিংক দিলাম যেখানে বাল্মীকি রামায়ণে কৃষ্ণের উপস্থিতি দেখানো হলো। 

ব্রহ্ম বৈবর্ত: বেদের কৃষ্ণ (brahma-vaivarta-special.blogspot.com)


নিন কনফিউশন দুর করিবার জন্য একটি লিংক দিলাম যেখানে বেদে কৃষ্ণের উপস্থিতি দেখানো হলো।


আসুন দেখি শ্রী শ্রী চন্ডী কি বলে?


শূলং শুলাদ্ বিনিস্কৃষ্য দদৌ তস্যৈ পিনাকধৃক্।

চক্রঞ্চ দত্তবান্ কৃষ্ণ: সমুৎপাদ্য স্বচক্রত:।।



অনুবাদ: পিনাক নামক ধনুর্ধারী মহাদেব স্বীয় শূল হইতে শূলান্তর এবং বিষ্ণু স্বীয় সুদর্শন চক্র হইতে চক্রান্তর উৎপাদন করিয়া মহাদেবীকে দিলেন।

.............. শ্রী শ্রী চন্ডী ২/২০।



দ্বাফরের পূর্বে যে কৃষ্ণের উপস্থিতি ছিলো তার প্রমান দেওয়া হলো।  এখন দেখে নেয়া যাক গীতার উপস্থিতি কোথায় কোথায় ছিলো:




অস্মিন্নর্থে পুরা গীতা শ্রুয়ন্তে ধর্ম্মচিন্তকৈ:।

শ্লোকা ন্যায়মবেক্ষদ্ভিস্তত্ত্বার্থাস্তদর্শিভি:।।

 


অনুবাদ: পুরাকালে ধর্ম্মচিন্তাকারী, ন্যায়দর্শী ও তত্ত্বজ্ঞ লোকেরাও এই বিষয়েই কতকগুলি শ্লোক বলিয়া গিয়াছেন; তাহা আমরা শুনিয়া থাকি।

 

…………… ৫১নং শ্লোক, অধ্যায় ০৩, সোপ্তিক পর্ব, মহাভারত।



গীতার অব্যয় যোগ মহাভারতের অংশ নয়, গীতার মাহাত্ম্য বাদে শুধুমাত্র জ্ঞাণটুকু মহাভারতে যুক্ত করা হয়েছে। তবে গীতা আলাদা শাস্ত্র।


আসুন দেখে নেই এই শ্লোকের বিষয়ে কোথায় কি বলা হয়েছে?



................ শুক্ল যজুর্বেদ ১৮/০১



ইদং তে নাতপস্কায় নাভক্তায় কদাচন
চাশুশ্রূষবে বাচ্যং মাং যোহভ্যসূয়তি ।।


অনুবাদ: যে তপস্যা করে না বা স্বধর্মানুষ্ঠান করে না, যে অভক্ত, যে শুনিবার ইচ্ছা রাখে না এবং যে আমাকে নিন্দা করে, এরূপ ব্যক্তিকে তুমি গীতাশাস্ত্র বলিবে না



ইদং পরমং গুহ্যং মদ্ভক্তেষ্বভিধাস্যতি

ভক্তিং ময়ি পরাং কৃত্বা মামেবৈষ্যত্যসংশয়ঃ ।। 


অনুবাদ: যিনি এই পরম গুহ্যশাস্ত্র আমার ভক্তগণের নিকট ব্যাখ্যা করিবেন, তিনি আমাকে পরাভক্তি করায় (অর্থাৎ এই কার্যে আমি ভগবানেরই উপাসনা করিতেছি এইরূপ মনে করায়) আমাকেই প্রাপ্ত হইবেন, ইহাতে সন্দেহ নাই


................. গীতা ১৮/(৬৭-৬৮)


পদ্মপুরান ও বরাহপুরান অনুসারে গীতার মহাত্ম্যতে গীতাকে শাস্ত্র হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে






গীতা যে আলাদা শাস্ত্র এবং কেউ গীতাকে নতুন করে শাস্ত্রীয় মর্যাদা দেন নাই তার প্রমান গীতা থেকেই পাওয়া যায়।


আসুন দেখে নেওয়া যাক আর কোথাও গীতার কথা উল্লেখ রয়েছে কিনা?


তদ্ দ্বয়মপি সা গীতার্থপ্রত্যভিজ্ঞানাৎ



……… শাণ্ডিল্য ভক্তি সুত্র  ৮৩।



উপরোক্ত রেফারেন্স গুলিতে উল্লেখিত ই বৈবস্বত মনুই ঋগ্বেদের ৮ম মন্ডলের ২৭-৩১নং সুক্তের ভাব সম্প্রসারনকারি।




Sunday, November 28, 2021

বৈষ্ণবরা মায়ায় যুক্ত থাকেন:

 বৈষ্ণবরা মায়ায় যুক্ত থাকেন:




যদি ষোন্যাঃ প্রমুচ্যেহহং তৎ প্রপদ্যে মহেশ্বরম্। অশুভক্ষয়কর্তারং ফলমুক্তিপ্রদায়কম্। যদি ষোন্যাঃ প্রমুচ্যেহহং তৎ প্রপদ্যে নারায়নম্। অশুভক্ষয়কর্তারং ফলমুক্তিপ্রদায়কম্। যদি ষোন্যাঃ প্রমুচ্যেহহং তৎ সাংখ্যাং যোগমভ্যাসে। অশুভক্ষয়কর্তারং ফলমুক্তিপ্রদায়কম্। যদি ষোন্যাঃ প্রমুঞ্চামি ধ্যায়ে ব্রহ্ম সনাতনম্।।৯।।


অনুবাদ: যদি আমি যোনি থেকে মুক্তি পাই তাহলে অশুভক্ষয়কারী, মুক্তিফলের প্রদাতা মহেশ্বরের শরন নিই। যদি আমি যোনি থেকে মুক্তি পাই তাহলে অশুভক্ষয়কারী, মুক্তিফলের প্রদাতা নারায়নের শরন নিই। যদি আমি যোনি থেকে মুক্তি পাই তাহলে অশুভক্ষয়কারী, মুক্তিফল প্রদায়ক সাংখ্য যোগ অভ্যাস করি, যদি আমি যোনি থেকে মুক্ত হই তাহলে চিরন্তন ব্রহ্মের ধ্যান করি।

.............. গর্ভোপনিষৎ ০৯


আর নারায়নই ব্রহ্ম এটা তৈতেরিয় আরন্যকেও রয়েছে:

সহস্রশীর্ষ দেবং বিশ্বাক্ষং বিশ্বশংভুবম।
বিশ্বং নারায়নং দেবমক্ষরং পরমং পদম্।
বিশ্বতঃ পরমন্নিত্যং বিশ্ব নারায়নঁহরিম্।
বিশ্বমেবেদং পুরুষস্তদ্বিশ্বভুপজীবতি।
পতিং বিশ্বস্যাত্মেশ্বরঁ শ্বাশতং শিবমচ্যুতম্।
নারায়ণং মহাজ্ঞেয়ং বিশ্বাত্মানং পরায়ণম্।
নারায়নঃ পরো জ্যোতিরাত্মা নারায়ণঃ পরঃ।
নারায়ণঃ পরং ব্রহ্মতত্ত্বং নারায়ণঃ পরঃ।
নারায়ণঃ পরো ধ্যাতা ধ্যানং নারায়নঃ পরঃ।
যচ্চ কিংচিজ্জগথ্সর্বং দ্দ্যুহ্যতে শ্রুয়তেঽপি বা।
অন্তর্বহিশ্চ তৎসর্ব ব্যাপ্য নারায়ণস্থিতঃ।।
এখানে নারায়ন যে ব্রহ্ম সেটা স্পস্টীকরন করে দিয়েছে।


অথ যোনিদ্বারাং সম্প্রাপ্তো যন্ত্রেণাপীড্যমানো মহতা দুঃখেন জাতমাত্রস্ত্ত বৈষ্ণাবেন বায়ুনা সংস্পৃষ্টঃ। তদা ন স্মরতি জন্ম-মরণানি, ন চ কর্ম শুভাশুভং বিন্দতি।

অনুবাদঃ অনন্তর যোনিদ্বার প্রাপ্ত হয়ে, যন্ত্রণায় সবিশেষ পীড়িত হয়ে অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জন্মাবার সঙ্গে বৈষ্ণব(বৈষ্ণব মায়া যুক্ত) বায়ুর দ্বারা গৃহীত হয়। তখন জন্মমৃত্যুসকল আর স্মরন করেনা। শুভাশুভ কর্মের বাদ বিচার মনে থাকেনা।
.............. গর্ভোপনিষৎ ১০।

Sunday, October 24, 2021

রামায়নের কৃষ্ণ:

 রামায়নের কৃষ্ণ:





ইতি শ্রুত্বা হৃষীকেশ: কামঠং রুপমাস্থিত:।

পর্বতং পৃষ্ঠত: কৃ্ত্বা শিশ্যে তত্রোদধৌ হরি:।

অনুবাদ: হৃষিকেশ শ্রীহরি দেবতাদের  এই প্রার্থনা শুনে কচ্ছপের রুপ ধরে মন্দার পর্বতকে নিজের পৃষ্ঠে ধারন করলেন এবং সুমুদ্রে শয়ন করলেন।



পর্বতাগ্রং তু লোকাত্মা হস্তেনাক্রম্য কেশব:।

দেবানাং মধ্যত:  স্থিত্বা মম  পুরুষোত্তম:।।

অনুবাদ: বিশ্বাত্মা পুরুষোত্তম কেশব, দেবতাদের মধ্যে অবস্থিত হয়ে পর্বতের অগ্রভাগ হস্ত দ্বার ধারন করে সুমুদ্র মন্থন করতে লাগলেন।


......................... ২৯,৩০ নং শ্লোক ৪৫অধ্যায়, বালকান্ড, বাল্মিকি রামায়ন।




শার্ঙ্গধন্বা ঋষীকেশপুরুষপুরুষোত্তম:

অজিতখড়্গধৃগ্ বিষ্ণুকৃষ্ণশ্চৈব বৃহদ্ বল:


অনুবাদআপনি শার্ঙ্গকার্মুকধারীঋষিকেশ(অর্থাৎইন্দ্রীয়গামের প্রভু)বিশ্বব্রহ্মান্ডের সত্ত্বাপুরুষোত্তম (সকলের শ্রেষ্ঠ), অজেয়খড়গধারী বিষ্ণু এবং সর্বশক্তিমান শ্রীকৃষ্ণ



সেনানীর্গ্রামণীশ্চ ত্বং বুদ্ধি: সত্ত্বং ক্ষমা দম:।

প্রভবশ্চাপ্যয়শ্চ ত্বমুপেন্দ্রো মধুসুদন:।


অনুবাদ: আপনি দেব সেনাপতি, প্রামসমুহের মুখ্য কর্তা। আপনি বুদ্ধি, ক্ষমা, ইন্দ্রিয়গ্রামের প্রশমক দম নামে জ্ঞাত। সমস্ত কিছুর উৎস ও প্রলয়। আপনি উপেন্দ্র বামনাবতার এবং মধুসুদন (মধু নামক দৈত্যের সংহারক)।


…… (১৫-১৬)/১১৭ স্বর্গযুদ্ধকান্ডবাল্মিকী রামায়ন।


আপনি বলতে পারেন এই মধুসুদনতো বিষ্ণুকে বলা  হয়েছে, হুম বিষ্ণু রুপী কৃষ্ণ কিংবা কৃষ্ণরুপী বিষ্ণুকেই বলা হয়েছে। বিষ্ণু পূর্ব থেকেই কৃষ্ণ নামে পরিচিত। অথবা বলতে পারেন কৃষ্ণই বিষ্ণু নামে পূর্ব থেকেই পরিচিত। সত্য তো এটাই যে বিষ্ণু ও কৃষ্ণ একই। আসুন দেখে নেই গীতায় কৃষ্ণের বিশ্বরুপ প্রদর্শনের পূর্ব থেকেই বারংবার কৃষ্ণকে মধুসুদন বলে ডাকা হয়েছে।



অর্জ্জুন উবাচ

মাতুলাঃ শ্বশুরাঃ পৌত্রাঃ শ্যালাঃ সন্বন্ধিনস্তথা।
এতান্ন হন্তুমিচ্ছামি ঘ্নতোহপি মধুসূদন।। /৩৪


সঞ্জয় উবাচ

তং তথা কৃপয়াবিষ্টমশ্রুপূর্ণাকুলেক্ষণম্।

বিষীদন্তমিদং বাক্যমুবাচ মধুসূদনঃ।। /


অর্জ্জুন উবাচ

কথং ভীস্মমহং সংখ্যে দ্রোণঞ্চ মধুসূদন।

ইযুভিঃ প্রতিযোৎস্যামি পুজার্হাবরিসূদন।। /


অর্জ্জুন উবাচ

যোহয়ং যোগস্ত্বয়া প্রোক্তঃ সাম্যেন মধুসূদন।

এতস্যাহং পশ্যামি চঞ্চলত্বাৎ স্থিতিং স্থিরাম্।।৬/৩৩


অর্জ্জুন উবাচ

অধিযজ্ঞঃ কথং কোহত্র দেহেহস্মিন্ মধুসূদন

প্রয়াণকালে কথং জ্ঞেয়োহাস নিয়তাত্মভিঃ।।৮/২



আসুন দেখি  বাল্মিকী রামায়নে কোথায়  সরাসরি কোথায় কৃষ্ণের কথা রয়েছে,



মাহেন্দ্রশ্চ কৃতো রাজা বলিং বদ্ধ্বা সুদারুণম্

সীতা লহ্মীর্ভান্ বিষ্ণুর্দেবকৃষ্ণ প্রজাপতি:২৭


অনুবাদআপনি অত্যন্ত পরাক্রমী দৈত্যরাজ বলিকে বন্দি করে দেবরাজ ইন্দ্রকে ত্রিভুবনের রাজা করিয়াছিলেন সীতা সাক্ষাৎ লহ্মী এবং আপনি নারায়ণ আপনি সচ্চিদানন্দস্বরুপ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং প্রজাপতি

…… ২৭/১১৭ স্বর্গযুদ্ধকান্ডবাল্মিকী রামায়ণ






















কুর্ম রুপি পরমাত্মা:

 কুর্ম রুপি পরমাত্মা:



হংস:, কূর্মশ্চ মৎস্যশ্চ প্রদুর্ভাবা দ্ধিজোক্তম।। ১০৩।।

বরাহো নরসিংহশ্চ বামনো রাম ইব চ।

রামো দাশারথিচৈব সাত্বত: কল্কিরেব চ।।১০৪।।




অনুবাদ:  দ্বিজশ্রেষ্ঠ! হংস, কূর্ম, মৎস্য, বরাহ, নরসিংহ, বামন, পরশুরাম, দশরথনন্দন রাম, যদুবংশি শ্রীকৃষ্ণ তথা কল্কি- যে সব অবতার ।

.................... ১০৩-১০৪শ্লোক৩৪১অধ্যায়৫৩৫২পৃ, শান্তি পর্ব, মহাভারত(গীতা প্রেস)


ইতি শ্রুত্বা হৃষীকেশ: কামঠং রুপমাস্থিত:।

পর্বতং পৃষ্ঠত: কৃ্ত্বা শিশ্যে তত্রোদধৌ হরি:।

অনুবাদ: হৃষিকেশ শ্রীহরি দেবতাদের  এই প্রার্থনা শুনে কচ্ছপের রুপ ধরে মন্দার পর্বতকে নিজের পৃষ্ঠে ধারন করলেন এবং সুমুদ্রে শয়ন করলেন।


পর্বতাগ্রং তু লোকাত্মা হস্তেনাক্রম্য কেশব:।

দেবানাং মধ্যত:  স্থিত্বা মম  পুরুষোত্তম:।।

অনুবাদ: বিশ্বাত্মা পুরুষোত্তম কেশব, দেবতাদের মধ্যে অবস্থিত হয়ে পর্বতের অগ্রভাগ হস্ত দ্বার ধারন করে সুমুদ্র মন্থন করতে লাগলেন।


......................... ২৯,৩০ নং শ্লোক ৪৫অধ্যায়, বালকান্ড, বাল্মিকি রামায়ন।



যদা সংহরতে চায়ং কুর্ম্মোহঙ্গানীব সর্ব্বশঃ।

ইন্দ্রিয়াণীন্দ্রিয়ার্থেভ্যস্তস্য প্রজ্ঞা প্রতিষ্ঠিতা।। 


অনুবাদ: কচ্ছপ যেমন কর-চরণাদি অঙ্গসকল সঙ্কুচিত করিয়া রাখে, তেমনি যিনি রূপরসাদি ইন্দ্রিয়ের বিষয় হইতে ইন্দ্রিয়সকল সংহরণ করিয়া লন, তিনিই স্থিতপ্রজ্ঞ।


.................. গীতা ২/৫৮















সুপর্ণ: পার্জন্য আতির্বাহসো দর্বিদা তে বায়বে বৃহস্পতয়ে বাচস্পতয়ে পৈঙ্গরাজোহলজ আন্তরিক্ষ: প্লবো মদগুর্মৎস্যস্তে নদীপতয়ে দ্যাবাপৃথিবীয়: কূর্ম:।।

অনুবাদ: 


.............. ৩৪নং মন্ত্র ২৪ যর্জুবেদ।




Thursday, October 14, 2021

কামরুপি পরমাত্মা:

নারায়ন কেশবই কামদেবঃ



ভীষ্ম উবাচ,

 নম নারায়ণায়েতি কামদেবাত্মনে নমঃ

 অনুবাদঃ নারায়ণ কামদেবাত্মাকে নমস্কার

 ........ ১১৫ নং শ্লোক, ২৩ অধ্যায়, সৃষ্টি খন্ড, পদ্মপুরান।

 


ন পশ্যামি কামকেশবয়োঃ সদা

 অনুবাদঃ কখনোই কামদেব ও কেশবে ভেদ করিনা।

 ........ ১২৮ নং শ্লোক, ২৩ অধ্যায়, সৃষ্টি খন্ড, পদ্মপুরান।



যত: সর্ব্বে প্রসূয়ন্তে হ্যানঙ্গাত্মাঙ্গদেহিন:।

উম্মাদ: সর্ব্বভূতানাং তস্মৈ কামাত্মনে নম:

 

অনুবাদ: যাহাদের মনে কাম এবং সমস্ত অঙ্গেও কাম থাকে, সেইরুপ সমস্ত প্রাণী যাহা হইতে উৎপন্ন হয় এবং যিনি সমস্ত প্রাণীর উম্মত্ততা জন্মাইয়া থাকেন; সেই কামরুপী পরমাত্মাকে নমস্কার করি।

................ ৫২নং শ্লোক, ৪৬অধ্যায়, শান্তি পর্ব, মহাভারত।


কামস্তদগ্রে সমবর্তত মনসো রেত: প্রথমং যদাসীৎ।

স কাম কামেন বৃহতা সযোনী রায়স্পোষং যজমানায় ধেহি।।



ছবিটি হরিশরন সিদ্ধান্ত লঙ্কার এর।


ছবিটি সুবোধ ভাষ্যের।


……. অথর্ববেদ ১৯কান্ড ৫২সুক্ত ১ নং মন্ত্র।


ত্বং কাম সহসাসি প্রতিষ্ঠিতো বিভুর্বিভাবা সখা আ সখীয়তে।

ত্বমুগ্র: পৃতনাসু সাসহি: সহ ওজো যজমানায় ধেহি।।



ছবিটি হরিশরন সিদ্ধান্ত লঙ্কার এর।


ছবিটি সুবোধ ভাষ্যের।

……. অথর্ববেদ ১৯কান্ড ৫২সুক্ত ২ নং মন্ত্র।

Monday, October 4, 2021

কৃষ্ণই গণেশ:

 কৃষ্ণই গণেশ:






যা এব মুলপ্রকৃতির্যস্যা: পুত্রো গণেশ্বর: ।

কৃত্বা কৃষ্ণব্রতং সাচ লেভে গণপতিং সুতং।২১।।

স্বাংশেন কৃষ্ণো ভগবান বভুত চ গণেশ্বর:।২২।।

 


অনুবাদ: গণেশজননী মূলপ্রকৃতি ভগবতী দুর্গাদেবী পরাৎপর পরমাত্মা কৃষ্ণের ব্রত অবলম্বন করিয়া তৎপ্রসাদে গণপতিকে পুত্ররুপে প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। ভগবান কৃষ্ণ সীয় অংশে গণেশরুপে সমুৎপন্ন হন।।



……………… অধ্যায় ৬৬, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরান প্রকৃতি খন্ডম।



এই পুস্পক ব্রতের প্রভাব দ্বারা স্বয়ং গোলোকনাথ শ্রীকৃষ্ণ পার্বতীর গর্ভ থেকে উৎপন্ন হয়ে আপনার পুত্র হবেন। ঐ কৃপানিধি স্বয়ং সমস্ত দেবগণের ইশ্বর। এই জন্য ত্রিলোকে গণেশ নামে বিখ্যাত।



..................... অধ্যায় ০৬, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরান, গণপতি খন্ড।